• মহদিপুরে বাণিজ্যে ক্ষতি ছাড়াল ৩০০ কোটি টাকা
    বর্তমান | ২৩ জুলাই ২০২৪
  • রঞ্জুগোপাল মুখোপাধ্যায়, মালদহ: বাংলাদেশের অশান্তির প্রভাব পড়েছে এপারের বাণিজ্যে। ওপারে সৃষ্টি হওয়া অচলাবস্থার জেরে মালদহের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। গত এক সপ্তাহ ধরেই পণ্য পরিবহণে বিঘ্ন ঘটছিল। রবি ও সোমবার পণ্য আমদানি-রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ফলে এপারের রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতির অঙ্ক ইতিমধ্যেই ৩০০ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে বণিকসভার তরফে দাবি করা হয়েছে। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফলে ব্যবসায়ীমহলে চরম উদ্বেগ ছড়িয়েছে। অবিলম্বে সমস্যা সমাধান না হলে ক্ষতির বহর আরও বাড়বে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, পরপর দু’দিন মহদিপুর স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। গত বেশ কয়েকদিন ধরেই পরিষেবায় প্রভাব পড়ছিল। বর্তমানে সমস্যা প্রকট হয়েছে। পচনশীল আনাজপাতি, ফল নিয়ে প্রচুর ট্রাক ওপারে যাওয়ার জন্য মালদহের সীমান্তে অপেক্ষা করছে। ফের পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরুর ব্যাপারে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ওপার থেকে কোনও নিশ্চয়তা আসেনি। ফলে আমরা উদ্বেগে রয়েছি। গত কয়েকদিনে সবমিলিয়ে ক্ষতির অঙ্ক ৩০০ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে।


    মালদহ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানির উপর আমাদের খুব একটা নিয়ন্ত্রণ থাকে না। বিষয়টি উভয় দিকের বণিকসভা ও সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় সংস্থা দেখে থাকে। এপারে কোনও সমস্যা হলে আমাদের কাছে ব্যবসায়ীরা আসেন। তখন আমরা নিজেদের এক্তিয়ারের মধ্যে থাকা সমস্যার সমাধান করি। অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আমরা কোনও মন্তব্য করতে পারি না। তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া উচিত। তা না হলে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দামের উপর প্রভাব পড়বে।   


    বণিকসভা ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে,স্বাভাবিক সময়ে মহদিপুর স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৪৫০টি ট্রাক চলাচল করে। ছাত্র আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশে হিংসা ছড়িয়ে পড়তেই মহদিপুর বন্দরে পণ্য পরিবহণে প্রভাব পড়ে। ওপারের ব্যবাসায়ীরা সীমান্ত এলাকা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমদানি করা সামগ্রী পাঠাতে পারছিলেন না। সেই কারণে তাঁরা নতুন করে পণ্য আমদানি কমাতে শুরু করেন। মাঝে কয়েকদিন দৈনিক ৪০-৫০টি ট্রাক পণ্য নিয়ে ওপারে যাচ্ছিল। বাংলাদেশ থেকেও পণ্যবাহী ট্রাক এপারে আসছিল। কিন্তু গত দু’দিনে তাও বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি চিঠি দিয়ে এপারের ব্যবসায়ীদের ওপারের বণিকসভা জানিয়ে দেয়। তারপর থেকে নতুন করে আর কোনও চিঠি আসেনি বলে মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের কর্তারা জানিয়েছেন। চেম্বার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য মহদিপুরে স্থলবন্দরে শতাধিক পাথরের ট্রাক আটকে রয়েছে। পাশাপাশি পেঁয়াজ সহ অন্যান্য আনাজপাতি, ফল, গুড় সহ বিভিন্ন সামগ্রী বোঝাই ট্রাকগুলি ওপারে যেতে পারছে না। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে পেঁয়াজ নিয়ে। কারণ ট্রাক বোঝাই পেঁয়াজ পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এক রপ্তানিকারক বলেন, মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হচ্ছে। পেঁয়াজে যাতে হাওয়া যায়, তারজন্য বেশকিছু ট্রাকের ত্রিপল খুলে দেওয়া হয়েছে। বর্ষায় পেঁয়াজ দ্রুত পচে যায়। ফলে আমরা বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা করছি। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)