হেলে যাওয়া চুন-সুড়কির স্কুল ভবনে চলছে ক্লাস, সংস্কার দাবি
বর্তমান | ২৩ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, ইসলামপুর: মান্ধাতার আমলে ইট, চুন, সুড়কি দিয়ে তৈরি হয়েছিল ইসলামপুর হাইস্কুলের ভবন। ৭০ বছরে ভবনটির এখন কঙ্কালসার দশা। ভবনটি একদিকে হেলে পড়েছে। ফাটলও ধরেছে দেওয়ালে। ক্লাস চলাকালীন খসে পড়ছে পলেস্তরা। বৃষ্টির সময় ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই চলছে ক্লাস। ইসলামপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী ইসলামপুর হাইস্কুলে এমন অব্যবস্থায় পড়ুয়া থেকে শুরু করে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভবনের বেহাল দশা নিয়ে জেলা শিক্ষাদপ্তর, সমগ্র শিক্ষা অভিযান, জেলা শাসক ও বিধায়ককেও জানানো হয়েছে। কিন্তু স্কুল সংস্কারে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৯৫৪ সালে স্কুলটি গড়ে ওঠে। একবছর পরই বিধায়ক আব্দুলকরিম চৌধুরীর বাবা সেসময় এক লক্ষ টাকা দান করেছিলেন। ওই টাকা দিয়ে ইট, বালি, চুন, সুড়কি দিয়ে দোতলা ভবন তৈরি হয়। ওই ভবনে নীচে সাতটি এবং দোতলায় আরও সাতটি ঘর তৈরি করা হয়।
সেই ভবন বেহাল হয়ে পড়ায় আতঙ্ক চেপে বসেছে পড়ুয়াদের মনে। নবম শ্রেণির ছাত্র প্রিতাংশু মণ্ডল বলেন, ভবনটি একদিকে হেলে গিয়েছে। যখন তখন পলেস্তরা খসে পড়ে। বৃষ্টির সময় জল পড়ে। ক্লাসে বসতেই আমাদের ভয় করে। নতুন ক্লাসরুমের দরকার। নবম শ্রেণির আরও দুই ছাত্র রবিউল ইসলাম এবং আরুষ দাসও একই কথা বলেছে।
এই ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সলিমুদ্দিন আহমেদ বলেন, ভবনটির যা অবস্থা, তাতে যে কোনও মুহুর্তে বড় বিপদ হতে পারে। সেজন্য স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটি ভবনটিকে নতুন করে নির্মাণের জন্য এক কোটি ৭৮ লক্ষ টাকার একটি এস্টিমেট তৈরি করেছে। এস্টিমেট সহ নতুন ভবন নির্মাণের আবেদন জানিয়ে জেলাস্তরের সমস্ত অফিসেই চিঠি করেছি। এবার কলকাতায় স্টেটপ্রজেক্ট ডিরেক্টর এবং কমিশনার অব স্কুল এডুকেশনেও আবেদন জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারিভাবে ভবনটি বিপদগ্রস্ত ঘোষণা হয়নি বলে সেখানে ক্লাস চালাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মুরারিমোহন মণ্ডলকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি।
স্থানীয় বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরী ইতিমধ্যেই ভবনটি পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ভবনটি একদিকে হেলে গিয়েছে। নতুন ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এই বিষয়ে জানাবো। প্রয়োজন হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জানাব।