• মুক্ত পরিবেশে জন্ম নেওয়া শকুনশাবক উড়ল আকাশে
    বর্তমান | ২৩ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: খাঁচার ভিতর নয়। খাঁচা থেকে ছাড়া পাওয়া প্রাপ্তবয়স্ক দু’টি শকুন উত্তরবঙ্গের রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলে বাসা বেধেছিল। জন্ম দিয়েছিল একটি শাবকের। নব্বই দশকের পর এই প্রথম খোলা জঙ্গলে প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে জন্ম হয় শাবকটির। বন্যপ্রাণের ফার্স্ট জেনারেশন হিসেবে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে এই শাবকটির নাম দেওয়া হয়েছে—‘এফ-১’। সেই শাবকের উপর নজরদারি চালাচ্ছিল বনদপ্তর, কবে সে বড় হয়ে ডানা মেলে উড়বে। ছিল উদ্বেগও। কারণ গাছের ডালের উপরে যখন তখন বিপদ হতে পারে। অবশেষে শেষ হাসি হাসল বনদপ্তর। সেই শকুন শাবক এফ-১ বড় হয়ে উড়ল বাসা থেকে। যা বনদপ্তরের এক ঐতিহাসিক সাফল্য।


    পশু চিকিৎসায় ‘ডাইক্লোফেনাক’ প্রয়োগ করা গোরুর মাংস খেয়ে মড়ক লেগেছিল শকুনের। নব্বই দশকে শেষ দেখা গিয়েছে শকুনের ঝাঁক। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এরপর শকুন সংরক্ষণ ও প্রজননের উদ্যোগ নেয় বনদপ্তর। ২০০৫ সালে আলিপুরদুয়ারের রাজাভাতখাওয়ায় তৈরি হয়েছিল ‘রাজাভাতখাওয়া কনজারভেশন অ্যান্ড ব্রিডিং সেন্টার’। এতদিন ওই ব্রিডিং সেন্টারে খাঁচায় বন্দি অবস্থায় থাকা শকুন শাবকের জন্ম হয়েছে। কিন্তু খোলা জঙ্গলে বাসা বেধে থাকা শকুনের কোনও শাবকের জন্ম হয়নি। তাই প্রাকৃতিকভাবে শকুন শাবকের জন্ম দিতে ২০২১ সালে খাঁচা থেকে ৩১টি প্রাপ্তবয়স্ক হোয়াইট ব্যাকড শকুনকে রাজাভাতখাওয়ার জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল। গতিবিধি মনিটারিং করার জন্য ট্রান্সমিটার লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। গত নভেম্বর মাসে ‘এন-৩’ এবং ‘পি-৬’ নামের একজোড়া (মেল ও ফিমেল) শকুন গাছে বাসা বাধে। জানুয়ারি মাসের শেষদিকে বাসায় ডিম ফুটে জন্ম হয় ‘এফ-১’ শাবকের। জন্ম নেওয়ার পর বাসা থেকে উড়তে একটি শকুন শাবকের ১১০-১৫০ দিন সময় লাগে। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) দেবল রায় বলেন, ‘প্রাকৃতিক উপায়ে শকুন শাবকের জন্মের পর থেকে আমরা নজর রাখছিলাম। সেটি বড় হওয়ার পর কিছুদিন আগে বাসা থেকে উড়ে গিয়েছে। এটা সত্যিই আনন্দের খবর।’
  • Link to this news (বর্তমান)