• দোকান ও পার্টি অফিসে ভাঙচুর, উত্তপ্ত পানিহাটি
    বর্তমান | ২৩ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: ২১ জুলাইয়ের সভা থেকে দলের নেতা-কর্মীদের শৃঙ্খলারক্ষার পাঠ পড়িয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই শাসক দলের কোন্দলে উত্তাল হল পানিহাটি। সোমবার দুপুরে পশ্চিম পানিহাটি শহর যুব তৃণমূল সভাপতির অফিস ও সংলগ্ন একটি দোকানেও ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। শাসক দলের বিধায়ক ঘনিষ্ঠরা এই ভাঙচুরের ঘটনায় যুক্ত বলে অভিযোগ। যদিও বিধায়ক গোষ্ঠীর দাবি, জনরোষে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিস জানিয়েছে, ভাঙচুরের ঘটনায় শুভজিৎ শেঠ, সাহেব বিশ্বাস ও শুভ দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম পানিহাটি শহর যুব তৃণমূল সভাপতি বুবাই মল্লিক কয়েক মাস আগেও পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ ও তাঁর ছেলে তীর্থঙ্কর ঘোষের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিল। গত জানুয়ারি মাসে পানিহাটি উৎসবের সময় মহিলা পুলিস কর্মীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় বুবাই ও তার দলবলের নাম জড়ায়। খড়দহ থানার তৎকালীন ওসিকে ফোনে গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বুবাইয়ের বিরুদ্ধে। ওই সময় পুলিস বুবাইয়ের বেশ কয়েক জন সাঙ্গোপাঙ্গকে গ্রেপ্তার করেছিল। কিন্তু প্রভাবশালীদের হাত মাথায় থাকায় বুবাই পুলিসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে আত্মগোপন করতে হয়েছিল। ওই পর্ব থেকেই শুরু হওয়া নানা সমীকরণে বিধায়ক ও তাঁর ছেলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল যুব তৃণমূল নেতার। সূত্রের খবর, ২১ জুলাইয়ে দলের ধর্মতলার কর্মসূচিতে বুবাই দলবল নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতেই সমস্যা তৈরি হয়। তাঁকে ওই কর্মসূচিতে যেতে বারন করা হলেও, তিনি গিয়েছিলেন। 


    রবিবার মধ্যরাতে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড যুব তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক ঘনিষ্ঠ সুমিত পাল এক বন্ধুর সঙ্গে বাইকে ফিরছিলেন। কাচকল মোড়ের কাছে তাঁরা বাইক নিয়ে পড়ে যান। ওই সময় ঘটনাস্থলে ছিল বুবাইয়ের অনুগামী পরিতোষ দাস সহ অন্যান্যরা। অভিযোগ, ওই সময় পরিতোষ ও তার দলবল সুমিত পাল ও তাঁর বন্ধুকে ঘিরে ধরে মারধর করে। যদিও পরিতোষদের দাবি, ওই রাতে বাইকে করে সুমিতকে তারাই বাড়ি পৌঁছে দিয়ে এসেছিল। সোমবার সকালে ওই ওয়ার্ডের বিধায়ক অনুগামীরা খড়দহ থানায় বুবাই ও তাঁর দলবলের নামে অভিযোগ জানাতে যায়। দুপুরে ফেরার সময় তারাই বিটি রোড লাগোয়া দত্ত রোডের একটি দোকান ও ঈশ্বর চট্টোপাধ্যায় রোডে বুবাইয়ের অফিস ভেঙে তছনছ করে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে।পশ্চিম পানিহাটি শহর তৃণমূল সভাপতি প্রবীর ভট্টাচার্য বলেন, বুবাইয়ের সঙ্গে পরিতোষের মতো সমাজবিরোধীরা থাকে। ওদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল। এদিন ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে।  যুব তৃণমূল সভাপতি বুবাই মল্লিক বলেন, আমাকে ২১ জুলাইয়ের সভায় যেতে না করা হয়েছিল। আমি সেখানে যাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। সঙ্গে সমাজবিরোধী রাখার অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আমি বিনীত ভাবে জানতে চাই, এরা সমাজবিরোধী কবে থেকে হল! ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার তথা বিধায়কের ছেলে তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, বুবাই দীর্ঘদিন রাজনীতির বাইরে। থানার ওসিকে হুমকি দেওয়ার পর থেকে আমরা যোগাযোগ ছিন্ন করে দিয়েছিলাম। ওদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)