• পানীয় জলের লাইনে সমস্যা খুঁজতে নামল রোবট
    বর্তমান | ২৩ জুলাই ২০২৪
  • অর্ক দে, কলকাতা: আশপাশের অঞ্চলে পানীয় জলের খুব একটা সমস্যা না থাকলেও পাটুলির রবীন্দ্রপল্লি এলাকায় জলের প্রেসার অত্যন্ত কম। কলের মুখ দিয়ে সরু ফিতের মতো জল পড়ে। কিন্তু সাধারণভাবে এমন হওয়ার কথা নয়। কারণ, স্থানীয় বুস্টার পাম্পিং স্টেশন থেকে প্রবল চাপ দিয়েই জল পাঠানো হয়। জলের প্রেসার কম থাকার কারণে ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের এই অঞ্চলে এখনও জলের মিটারও বসানো যায়নি। মাঝপথে কোথায় এবং কী কারণে জলের চাপ কমে যাচ্ছে? তা জানতে এবার পানীয় জলের পাইপলাইনে রোবট নামাল কলকাতা পুরসভা। পাইপলাইনের ছিদ্র বা লিকেজ থেকে শুরু করে যাবতীয় সমস্যা ধরা পড়বে রোবটের ক্যামেরায়। কলকাতা পুরসভার কেইআইআইপি প্রকল্পের আওতায় এই কাজ চলছে। 


    পাটুলি-বৈষ্ণবঘাটা এলাকায় কেইআইআইপি প্রকল্পে বাড়ি বাড়ি জলের মিটার বসানো নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। যেখানে জলের চাপ কম, সেখানে বিপুল অর্থ ব্যয় করে মিটার বসানোর যৌক্তিকতা কতখানি, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর ওই মতামতের পর রবীন্দ্রপল্লি এলাকা থেকে ১০-১২টি জলের মিটার খুলেও নেওয়া হয় বলে খবর। তারপরই শুরু হয় ওই এলাকায় জলের চাপ কম হওয়ার কারণ অনুসন্ধান। গোটা প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করছে কেইআইআইপির তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত সুয়েজ নামক এক বেসরকারি সংস্থা। তারাই জলের মিটার বসানোর কাজও করছে। জলের পাইপে কোথায় লিকেজ, কোথায় পড়েছে পুরু পলির স্তর, সবটাই জানা যাবে রোবটের মাধ্যমে। গোটা প্রক্রিয়াটি রিমোট-কন্ট্রোলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে। পুরসভার পানীয় জল সরবরাহ বিভাগের কর্তারা বলছেন, পাইপের ভিতরে কোথাও পলি জমে থাকলে জল যেতে সমস্যা হয়। সেরকম ঘটলে রোবটের ক্যামেরায় তা ধরা পড়বে। পাইপের ভিতরের সব অংশের ছবি তুলে পাঠাতে সক্ষম এই রোবট। এক অফিসার বলেন, ‘এমন টেকনলজি রাজ্যে প্রথম ব্যবহার হচ্ছে। এর আগে কোয়েম্বাটুরে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার হয়েছে।’ স্থানীয় কাউন্সিলার বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত বলেন, ‘আম জনতার স্বার্থে যা যা প্রযুক্তি ব্যবহার করা দরকার, তা করতেই হবে। দ্রুত সমস্যার কারণ খুঁজে সমাধান করা হোক।’ 


    সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা আরও জানান, এই প্রযুক্তি আমদানির ফলে বারবার রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি করতে হবে না। কোনও পানীয় জলের লাইনে সমস্যা হলে গোটা রাস্তা না কেটে ১৫০ থেকে ২০০ মিটার অন্তর গর্ত করে পাইপের ভালভ খুলে ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে ক্যামেরাযুক্ত যন্ত্রমানব। ৯০ মিমি থেকে ১৫০০ মিমি পর্যন্ত চওড়া পাইপে ব্যবহার করা যাবে এই রোবট। সেটিতে ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা থাকছে, যা ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে ছবি তুলতে পারবে। রয়েছে শক্তিশালী সেন্সর। থাকছে লেজার প্রোফাইলিং ব্যবস্থা। সমস্ত ছবি এবং ভিডিও আপলোড হবে একটি নির্দিষ্ট অ্যাপে। সেই ছবিগুলি বিশ্লেষণ করে মিলবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই ভিত্তিক রিপোর্ট। 
  • Link to this news (বর্তমান)