বর্ষা বাড়তেই শুরু ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ! জ্বরে কাবু বাংলা
প্রতিদিন | ২৩ জুলাই ২০২৪
স্টাফ রিপোর্টার: আকাশে-বাতাসে ভাসছে ভাইরাস। ঘুরছে মানুষের সঙ্গে। বাস, ট্রাম, ট্রেন থেকে স্নানঘর সর্বত্র ছড়িয়েছে ভাইরাস! এসব গল্প নয়। বর্ষার শুরু থেকেই বাড়ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা। সেই ইনফ্লুয়েঞ্জার বিভিন্ন সাব-টাইপ বা উপপ্রজাতির দাপট তামাম বঙ্গে রাজ করছে। এসবের মধ্যে যেমন রয়েছে করোনা। তেমনই সোয়াইন ফ্লু, বার্ড ফ্লু-র মতো ভাইরাসও ঘুরে বেড়াচ্ছে।
কলকাতা তো বটেই রাজ্যের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের তথ্য এমনটাই বলছে। এইসব ভাইরাস দ্রুত সংক্রমিত হয়। কলকাতার ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে গত দুসপ্তাহে চার শিশু সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়। তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। এক শিশু চিকিৎসাধীন। ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ সূত্রে খবর, শিশুটি কলকাতার বাসিন্দা।
বিসি রায় শিশু হাসপাতালে (Dr. B C Roy Post Graduate Institute of Paediatric Sciences) যত শিশু ভর্তি হচ্ছে তাদের ৮০ ভাগেরই জ্বর,সর্দি, গা-ব্যথা। সমস্যা হল জ্বর এক ধাক্কায় ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠছে। টানা তিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত জ্বর চলছে। বিসি রায় শিশু হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ ডা. দিলীপ পালের কথায়, “প্রথমে মামুলি জ্বর ভেবে উপেক্ষা করলেই বিপদ। ২দিনের মধ্যে জ্বর না ছাড়লে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।”
ফি বছরেই বর্ষার শুরুতে জ্বর-সর্দির প্রকোপ বাড়ে। কিন্তু এবার অত্যন্ত বেশি। বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জয়দেব রায়ের কথায়, “জ্বর বেশি হলে ভাল করে স্নান করিয়ে দিতে হবে। তবে মাথায় যেন ভিজে না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।” জয়দেববাবুর কথায়, বাবা-মা অ্যান্টিবায়োটিকের উপর গুরুত্ব দেন। এটা মোটেই ভাল অভ্যাস নয়। আসলে প্রচুর পরিমাণে জল, ফলের রস খেতে হবে। বন্ধ ঘর জীবাণুর বাসা। তাই রোগীর ঘরে হাওয়া বাতাস রোদ যাতে আসে, সেদিকে নজর দিতে হবে। জ্বর ছেড়ে গেলে অন্ত্যত সাতদিন পুরো বিশ্রামে থাকতে হবে। স্কুলে যাওয়া যাবে না। কারণ জ্বর ছাড়লেও ভাইরাস কিন্তু ফের মাথাচাড়া দেয়। আর দ্বিতীয়বার জ্বর হলে মারাত্মক হতে পারে। নিউমোনিয়া অসম্ভব নয়।”
ভাইরোলজিস্ট চিকিৎসক সুমন পোদ্দারের কথায়, “ইনফ্লুয়েঞ্জা নিয়ে ছোট-বড় নানা বয়সের রোগী ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে। শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়া নিয়ে।” এক ভাইরোলজিস্টের কথায়, এইচ১এন১ ভাইরাসকে এখনও চলতি কথায় সোয়াইন ফ্লু বলে। তবে এই নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সাধারণ প্যারাসিটামল বা প্যারাসেফ জাতীয় ওষুধেই জ্বর কমে। কিন্তু সর্দি থেকে গেলে সমস্যা। তাই দুটি দিকেই সর্তক থাকতে হবে বাবা-মাকে।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগী যে ঘরে থাকবে সেই ঘরে অন্য বাচ্চাকে ঢুকতে না দেওয়াই ভাল। কারণ, এইসব ভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক।