• বাজেট নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলের বন্যা
    বর্তমান | ২৪ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: এনডিএ জোট টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বাজেট ঘোষণা শেষ হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক ট্রোল শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন, ‘মোদির কুর্সি বাঁচানোর বাজেট’। আবার কেউ বলছেন, ‘বাংলায় অধিকাংশ আসনে হেরে গিয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছে বিজেপি’। কেউ লিখেছেন, ‘এটা দেশের বাজেট নাকি বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশের বাজেট, বোঝা দায়! কেন্দ্রের সরকারকে সমর্থনের পুরস্কার হিসেবে শুধু দু’টি রাজ্যকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে এই বাজেটে’। বাংলার বঞ্চনা নিয়েও আমজনতা সোশ্যাল মিডিয়ায় লাগাতার পোস্ট করেছে। কেউ লিখেছেন, বিহার, অসম ও উত্তরাখণ্ডে বন্যা নিয়ন্ত্রণে বরাদ্দ করল দিল্লি। কিন্তু বাংলার বন্যা নিয়ন্ত্রণে কোনও বরাদ্দ নেই। এই বাজেট নিয়ে তৃণমূলের পাশাপাশি সরব হয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বও। 


    বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের আগে যেসব বিষয় আমরা উত্থাপন করেছিলাম, সরকার সেগুলি কিছুটা মান্যতা দিয়েছে। রুটিরুজি বাড়ানোর চেষ্টা করেছে। তবে সাড়ে ৭৫ লক্ষ চাকরি তৈরি করতে হবে। সেদিকে কোনও দিশা নেই। বেকারদের চাকরির প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলেছিলাম আমরা। সেটাই এরা নকল করেছে। বাজেটে বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে কোনও কথা নেই। নিজেদের সরকার বাঁচানোর জন্য যে দু’টি রাজ্যের বেশি প্রয়োজন, সেদিকে বেশি নজর দিয়েছে। এই বাজেটে বিশাল কোনও মৌলিক পরিবর্তন হবে বলে মনে করছি না।  মানুষের রায় এই সরকারকে অনেক কিছু করতে বাধ্য করেছে। 


    বাজেট পেশ হওয়ার পরই বাংলার বঞ্চনা নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের পাশাপশি তৃণমূল নেতারা এই বাজেটকে ‘মোদির কুর্সি বাঁচানোর বাজেট’ বলে তোপ দেগেছেন। বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, শুধুমাত্র দু’টি রাজ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবারের বাজেট আসলে মোদির প্রধানমন্ত্রিত্ব বাঁচানোর বাজেট। বাংলাকে বঞ্চনার অন্যতম উদাহরণ এই বাজেট। কীভাবে নিজেরা ক্ষমতায় টিকে থাকবে, সেটাই মূল উদ্দেশ্য। কেন্দ্রীয় বাজেটে বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য বিপুল বাজেট বরাদ্দ করেছে মোদি সরকার। মনে হচ্ছে, এটা যেন ওই দুই রাজ্যকে খুশি করার বাজেট। শুধুমাত্র রাজনৈতিক লক্ষ্যে এই বাজেট করা হয়েছে। 


    বহরমপুরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, অন্ধ্রপ্রদেশ আর বিহারকে হাতে রাখার বাজেট এটা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আয় নেই। আমাদের দরকার বাজারে নগদের জোগান দেওয়া। মুদ্রাস্ফীতির দিকে নজর রাখা দরকার ছিল। তবেই ব্যবসা বাঁচবে। ওষুধের দাম কমল না। এই মুহূর্তে যেটা মধ্যবিত্তের সবথেকে বড় মাথাব্যথার কারণ। এই বাজেটে আমাদের ব্যবসায়ীদের কোনও লাভ হবে না। 


    অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অরুণ বসু বলেন, সিনিয়র সিটিজেনদের কোনও দিশা নেই এই বাজেটে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কোনও গাইডলাইন নেই। একটা বিশাল শ্রেণির মানুষের খাবার আর ওষুধের পিছনেই সব টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। ব্যাঙ্কের ইন্টারেস্ট কমছে, আর মানুষের সেভিংস দিন দিন তলানিতে এসে ঠেকছে।
  • Link to this news (বর্তমান)