নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: চাষের জন্য ২৫ জুলাই, বৃহস্পতিবার থেকে জল ছাড়বে ডিভিসি। ২৭ জুলাই থেকে ক্যানেলে জল আসতে শুরু করবে। মঙ্গলবার দক্ষিণবঙ্গের চার জেলার আধিকারিক এবং জনপ্রতিনিধিরা বর্ধমানে জেলাশাসকের কনফারেন্স হলে ডিভিসির সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিভিসির জলাধারে গত বছরের তুলনায় ছ’ফুট বেশি জল রয়েছে। ২০২৩সালে ৩০জুন পর্যন্ত মাইথনে ৪৬০.৩৩ফুট জল ছিল। পাঞ্চেতে ৩৯৯.৮৬ফুট জল ছিল। এবার দু’টি জলাধারেই জলের পরিমাণ বেশি রয়েছে। মাইথনে ৪৬৬.৩৩ এবং পাঞ্চেতে ৪০৬.২০ফুট জল রয়েছে। পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া এবং বাঁকুড়া জেলার আট লক্ষ ২০হাজার একর জমিতে জল পৌঁছবে। পূর্ব বর্ধমানের পাঁচ লক্ষ ৮৭হাজার ১৮৭, পশ্চিম বর্ধমানে ৫৩৯৩, হুগলির এক লক্ষ ৫৪হাজার ৫০৭ একর জমিতে জল যাবে। বাঁকুড়ার ৬৭হাজার ৩০০ এবং হাওড়া জেলার ১৪হাজার ৫০ একর জমিতে ডিভিসির জল যাবে। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, প্রথম পর্যায়ে ১৫দিনের জন্য ডিভিসি জল দেবে। পরবর্তীকালে আবার জলের প্রয়োজন হলে ডিভিসি সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে এক লক্ষ ৮০হাজার একর ফুট জল ছাড়া হবে। গতবারের চেয়ে এবার বেশি পরিমাণ জল দেওয়া হবে। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি গার্গী নাহা বলেন, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় জেলায় চাষের কাজ শুরু হয়নি। ২৭জুলাই থেকে দুর্গাপুর ব্যারেজ জল ছাড়তে শুরু করবে। ওইদিন থেকে ক্যানেলগুলিতে জল পৌঁছে যাবে। জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মেহেবুব মণ্ডল বলেন, এখনও পর্যন্ত জেলায় ৪৬শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। জেলায় এখনও পর্যন্ত মাত্র ৬.৭শতাংশ জমিতে বীজ রোপণ করা গিয়েছে। বাকি জমি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ডিভিসি জল দিলেই চাষ অনেকটা এগিয়ে যাবে। এরমধ্যে বৃষ্টি নামবে বলে আশা করছি।
প্রশাসন জানিয়েছে, গত তিন বছরের তুলনায় এবার মাইথন এবং পাঞ্চেতে বেশি জল মজুত রয়েছে। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হওয়ার জন্যই জলস্তর বেড়েছে বলে আধিকারিকদের দাবি। চাষিদের কথা ভেবে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা কমপক্ষে ১৫দিন জল দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। ডিভিসি তাতেই মান্যতা দিয়েছে। প্রতিটি এলাকার সেচখালগুলি সংস্কার করা হয়েছে। এবার সব জায়গায় জল পৌঁছতে সমস্যা হবে না বলে আধিকারিকদের দাবি। চাষিরা বলেন, বীজতলা তৈরি হয়েই রয়েছে। জমিতে জল পৌঁছলে চাষ করতে বেশি সময় লাগবে না। অনেক জমিতেই ট্রাক্টরে চাষ দেওয়া রয়েছে। ডিভিসির জলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন পূর্ব বর্ধমান জেলার চাষিরা। এই এলাকার সবচেয়ে বেশি জমিতে জল পৌঁছবে। এদিনের বৈঠকের পর জেলার চাষিরা স্বস্তি পেয়েছেন। বাকি জেলাগুলির চাষিরাও জল পেলেই পুরোদমে চাষের কাজে নামবেন।