নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়। তিস্তা নদীর ভাঙন ও ধসের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই পাহাড়ের জাতীয় সড়ক। গৃহহীন হয়ে বহু বাসিন্দা কার্যত উদ্বাস্তু। তবু সংশ্লিষ্ট দুই পাহাড়ের ধস ও নদী ভাঙন মোকাবিলায় বাজেটে বরাদ্দ করেনি বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার। এনিয়ে পাহাড়বাসী রীতিমতো ক্ষুব্ধ। তাঁদের একাংশ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিমাতৃসুলভ আচরণের অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে, পিপিএস ইস্যু নিয়ে ফের বিজেপির বিরুদ্ধে রাস্তায় নামার কথা ঘোষণা করেছে জিটিএ’র চিফ এগজিকিউটিভ অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা (বিজিপিএম)।
প্রায় ১০ মাস আগে হ্রদ বিস্ফোরণে তিস্তা নদী ভয়ঙ্কর রূপ নেওয়ায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাংলার প্রতিবেশী রাজ্য সিকিম। যার প্রভাব পড়ে বাংলার কালিম্পং ও জলপাইগুড়ি জেলার একাংশে। সেই ক্ষত এখনও পুরোপুরি মেটেনি। এমন পরিস্থিতে চলতি বর্ষার মরশুমে কালিম্পং পাহাড়ে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ছে তিস্তা নদী। ইতিমধ্যেই তিস্তা নদী কালিম্পং ও সিকিমের লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন অংশ গ্রাস করেছে। যার জেরে সংশ্লিষ্ট রাস্তা তিন সপ্তাহ ধরে বন্ধ।
শুধু তাই নয়, চলতি বর্ষার মরশুমে ধসের জেরে দার্জিলিং পাহাড়গামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের কয়েকটি জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত। এছাড়া, ধসের জেরে টয় ট্রেনের লাইন, কিছু গ্রামীণ রাস্তা ও বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে এদিন প্রাকৃতি দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত সিকিমের জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। কিন্তু, ১০ মাস আগে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কালিম্পং ও জলপাইগুড়ি জেলার জন্য কোনও ঘোষণা নেই।
এনিয়েই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রীতিমতো ক্ষুব্ধ জিটিএ চিফ অনীতের দল। বিজিপিএমের মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় অর্থ বরাদ্দ নিয়েও দু’মুখো নীতি নিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। ওরা সিকিমের পাশে দাঁড়ালেও দার্জিলিং ও কালিম্পংকে বঞ্চিত করেছে। ধস ও নদী ভাঙনে বিপর্যস্ত সংশ্লিষ্ট দুই পাহাড়ের ব্যবসা-বাণিজ্য লাটে উঠেছে। প্রচুর মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। কাজেই কেন্দ্রীয় বাজেটে ভারত বিকশিত হবে না। শুধু মাত্র কয়েকটি অঞ্চল বিকশিত হবে।
যদিও দার্জিলিংয়ের সাংসদ বিজেপির রাজু বিস্তা বলেন, সিকিম সহ দেশের অনেক অংশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এটা নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। বিজেপির পার্বত্য সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান বলেন, রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার জন্যই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কালিম্পং কেন্দ্রীয় সহায়তা পাচ্ছে না। পাল্টা তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য, পাহাড়ের ভোট লুট করলেও পাহাড়বাসীর পাশে নেই বিজেপি। এখন নিজেদের দায় এড়াতে পদ্ম শিবির অপপ্রচার করছে।
অন্যদিকে, পিপিএস ও ১১ জনজাতি ইস্যু নিয়ে সরব হয়েছে বিজিপিএম। এদিন দলের মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদবাবু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পাহাড় কব্জায় রেখেছে বিজেপি। আগামী সংসদের মনসুন সেশনে পিপিএস এবং ১১ জনজাতিকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বিজেপিকে পূরণ করতে হবে। তা না হলে রাস্তায় নামব। পাল্টা বিজেপির পার্বত্য সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি বলেন, ওসব ফাঁকা আওয়াজ গুরুত্বহীন।