ভুটান থেকে নেমে আসা নদীগুলি কতটা নুড়ি ও ডলোমাইট বয়ে আনছে, সমীক্ষা
বর্তমান | ২৪ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: ভুটান থেকে নেমে আসা আলিপুরদুয়ার জেলার নদীগুলি এবছর কোথায় কতটা ডলোমাইট, বালি, নুড়ি ও পলি বয়ে আনল তার সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে সেচদপ্তর। এই প্রাকৃতিক সম্পদগুলি সরাতে কত টাকা খরচ হতে পারে তারও সমীক্ষা করা হবে। আবার নেমে আসা ওই প্রাকৃতিক সম্পদগুলি কোনও নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা যায় কি না, তা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে যাচাই করে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তোর্সা, জয়ন্তী, বাসরা, পানা, সঙ্কোশ ও রায়ডাক সহ আলিপুরদুয়ারের বেশিরভাগ নদীই ভুটান থেকে নেমে এসেছে। প্রতিবছর বর্ষার সময় ভুটান থেকে আসা জেলার এই নদীগুলিই ডলোমাইট, নুড়ি, বালি ও পলি বয়ে আনছে। আর তার জেরে প্রতিবছর নদী তীরবর্তী গ্রামগুলি প্লাবিত হচ্ছে। ভুটান থেকে নেমে আসা ডলোমাইট, পলি, নুড়ি ও বালির কারণে অনেক নদীতে রাতারাতি চর গজিয়ে উঠেছে। যার ফলে নদী তীরবর্তী অনেক জনবসতি নিচু হয়ে যাওয়ায় সেচদপ্তরের কর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। জেলা সেচদপ্তর এই উদ্বেগের কথাও রাজ্যকে জানিয়েছে।
সেচদপ্তর জানিয়েছে, ডলোমাইট ও নুড়ি পাথরে ভরাট হয়ে যাওয়ায় জয়ন্তী নদীর নদীবক্ষ উঁচু হয়ে গিয়েছে। নিচু হয়ে গিয়েছে জয়ন্তী বনবস্তি। একইভাবে রায়ডাকের নদীবক্ষ ভুটান পাহাড়ের পলি ও নুড়ি মিশ্রিত বালিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় কুমারগ্রামের অমরপুর জনবসতিটি নিচু হয়ে যাচ্ছে। ভুটানের কাছে জয়গাঁ থেকে তোর্সার ডলোমাইট হাসিমারায় ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে তোর্সা সেতু পর্যন্ত চলে এসেছে। ডলোমাইট ও নুড়ি পাথরের কারণে কালচিনিতে পানা ও বাসরার গতিপথ বদল করায় উদ্বিগ্ন সেচদপ্তর। পলি ও নুড়ি পাথরের জন্য বাসরা ও কালিঝোরা গতিপথ বদল করায় সেন্ট্রাল ডুয়ার্স চা বাগানটির অস্তিত্ব বর্তমানে সঙ্কটে পড়েছে।
সেচদপ্তরের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অমরেশকুমার সিং বলেন, এবছর ভুটান থেকে নেমে আসা নদীগুলি কোথায় কতটা ডলোমাইট, বালি, নুড়ি ও পলি বয়ে আনল এবং এগুলি সরাতে কত টাকা খরচ হবে তার সমীক্ষার কাজ শুরু করা হয়েছে। সমীক্ষার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট রাজ্যে পাঠানো হবে।
সেচদপ্তর সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন ভুটান থেকে আসা খারখোলা ঝোরা, যোগীখোলা ঝোরা, হাসিমারা ঝোরা ও গোবরজ্যোতি নদীর কাদা মিশ্রিত পলিতে প্রতি বছর ঢেকে যাওয়া জয়গাঁ শহরের রাস্তাঘাট নিয়ে। এবার বর্ষার শুরুতেই জয়গাঁর বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটে ঢুকে পড়েছিল ভুটানের ওই কাদা মিশ্রিত পলি। সেচদপ্তর ও জেডিএ কর্তৃপক্ষ গোবরজ্যোতি ও ঝোরাগুলিতে জেসিবি লাগিয়ে পলি সরিয়ে পরিস্থিতির সামাল দিয়েছিল।