কেন্দ্রই চটের বস্তা সংক্রান্ত নিয়মকে অবহেলা করছে, অভিযোগে সরব শ্রমিক সংগঠন
বর্তমান | ২৪ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: চটের বস্তা সংক্রান্ত নিয়ম নিজেরাই অবহেলা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনই অভিযোগে সরব হল শ্রমিক সংগঠন। তাদের অভিযোগ, একদিকে সরকার চটের বস্তা কেনার নিয়ম মানছে না। অন্যদিকে পাটজাত দ্রব্যের আমদানি অব্যাহত রেখেছে। তার জেরে সঙ্কটে পড়ছে পাটশিল্প। তার দায় চোকাতে হচ্ছে শ্রমিক পরিবারগুলিকে।
সম্প্রতি জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার (জেসিআই) কলকাতা অফিসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুট পার্মানেন্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। সেখানেই তারা একগুচ্ছ অভিযোগ সামনে আনে। সংগঠনটির বক্তব্য, পাটশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে কিছু খাদ্যদ্রব্যের প্যাকেজিংয়ে চটের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে আইন আছে। সেই জেপিএম অ্যাক্টকে এখানে সঠিকভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে না, এমনটাই অভিযোগ তাদের।
সংগঠনের প্রেসিডেন্ট শিবপ্রসাদ তেওয়ারি বলেন, খাদ্যশস্যের প্যাকেটজাতকরণের ক্ষেত্রে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে প্রায় ৩৯ লক্ষ বেল পাট ব্যবহার করা হয়েছিল। চলতি অর্থবর্ষে তা ৩০ লক্ষ বেলে নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছি আমরা। এতে স্বাভাবিকভাবেই উৎপাদন কমবে। তাতে আর্থিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন শ্রমিকরা। যেখানে চিনির প্যাকেজিংয়ে ২০ শতাংশ চটের ব্যাগ ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক, সেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে তা ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র ৭ শতাংশ।
শিবপ্রসাদ তেওয়ারি আরও দাবি করেন, নেপাল ও বাংলাদেশ থেকে লাগাতারভাবে ভর্তুকিযুক্ত পাটজাত দ্রব্য আমদানি করা হচ্ছে। এতে প্রতিযোগিতার বাজারে দেশীয় পাট ধাক্কা খাচ্ছে। তাঁর কথায়, পাটের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করে ঠিকই। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, পাটের বাস্তব বাজার দর তার চেয়ে কম হচ্ছে। এতে সামগ্রিকভাবেই পাটজাত দ্রব্যের বাজার মার খাচ্ছে।
এই সমস্যাগুলিকে সামনে রেখেই জুট কমিশনার মলয়চন্দন চক্রবর্তীকে স্মারকলিপি দেয় সংগঠনটি। তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার খাদ্যশস্যে চটের ব্যাগের ব্যবহার বাড়াক। আইন অনুসারে সেই কাজ হোক। তারা বাজারে পাটের দরে ভারসাম্য রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুক। পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে পাটজাত দ্রব্যের আমদানিতে রাশ টেনে বাংলার পাটশিল্পকে রক্ষা করা হোক। এতে পাটশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ৪০ লক্ষ কৃষক পরিবার এবং ৩ লক্ষ ৭০ হাজার কর্মীর রুটিরুজি রক্ষা পাবে।