নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: একাধিক বেনিয়মের অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির সদস্যদের অপসারণের দাবিতে তুমুল বিক্ষোভ হল। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গার চৌরাশি হাইস্কুলে। ঘণ্টা তিনেক ধরে চলে বিক্ষোভ। দেগঙ্গা থানার পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় সূত্রের খবর, হাইস্কুলটি দীর্ঘদিনের এবং নামী। পড়ুয়ার সংখ্যা ২৩০০। চৌরাশি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিড ডে মিল নিয়ে সদ্য দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়েছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ এনামুল মোল্লা। তাঁর অভিযোগ ছিল, ১৩ জুলাই মিড ডে মিলের জন্য ৮ কেজি চাল এবং ৫ কেজি আলু দিয়ে খিচুড়ি রান্না হয়েছিল। সেদিনের হিসেব রান্নার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দিয়ে সইও করিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওইদিন ৩৩৭ জন মিড ডে মিল খেয়েছিল বলে বিডিও অফিসে প্রধান শিক্ষক শাহরিয়ার ইসলাম রিপোর্ট দিয়ে জানান। অভিযোগ শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের। আর হাইস্কুলের মিড ডে মিল নিয়ে এই দুর্নীতির ঘটনাটি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
মঙ্গলবার দুপুরে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্কুলের সামনে জড়ো হন অভিভাবকরা। পরে শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে আটকে রেখে অভিভাবক ও পড়ুয়ারা বিদ্যালয়ের গেটের সামনে জীবনপুর-কলসুর রোডের উপর টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান। ঘণ্টা তিন ধরে দফায় দফায় বিক্ষোভ চলে। তার জেরে বন্ধ হয়ে যায় স্কুলের স্বাভাবিক পঠন-পাঠন। অবিলম্বে প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির সদস্যদের পদত্যাগের দাবি জানান তাঁরা।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান দেগঙ্গা থানার পুলিস ও দেগঙ্গার যুগ্ম বিডিও। যুগ্ম বিডিও মিড ডে মিলের দুর্নীতির তদন্তের আশ্বাস দিলে বেলা সাড়ে ৪টে নাগাদ বিক্ষোভ উঠে যায়।
তবে, এদিন বিক্ষোভের সময় প্রধান শিক্ষক বা পরিচালন সমিতির কোনও সদস্য স্কুলে ছিলেন না। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র রফিকুল ইসলাম এবং পলাশ ইসলাম অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি পরিচালন সমিতির সদস্যরাও এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। এরই প্রতিবাদে আমাদের এই বিক্ষোভ। অবিলম্বে প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির সদস্যদের অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।
এ নিয়ে এই প্রসঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এনিয়ে দেগঙ্গার বিডিও ফাহিম আলম বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তদন্তের জন্য একটা টিম তৈরি হয়েছে। তদন্ত দ্রুতই শুরু হবে।