পাণ্ডুয়ার স্কুলে সিলিং ফ্যান ছিঁড়ে জখম ৪ ছাত্রী, ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা
বর্তমান | ২৪ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: স্কুলের টিফিনের সময় ক্লাসরুমের সিলিং ফ্যান ছিঁড়ে পড়ে গুরুতর জখম হল নবমের শ্রেণির চার ছাত্রী। মঙ্গলবার দুপুরে হুগলির পাণ্ডুয়ার রাধারাণি গার্লস হাইস্কুলে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরপরই স্কুল কর্তৃপক্ষ জখম ছাত্রীদের পাণ্ডুয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে পরিস্থিতি জটিল হওয়ায় তাদের মধ্যে তিনজনকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অভিভাবকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, সিটি স্ক্যান করার পর এক শিক্ষার্থীকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এই ঘটনায় স্কুলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে অভিভাবকদের একাংশ সরব হয়েছে। কর্তৃপক্ষ স্কুলের সব সিলিং ফ্যানের অবস্থা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়। সম্প্রতি হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষাদপ্তর একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডেকেছিল। সেখানে সব স্কুলের পরিকাঠামো যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তার মধ্যেই প্রকাশ্যে এল পাণ্ডুয়া স্কুলের ঘটনা। সুবীরবাবু বলেন, স্কুলগুলির পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার কাজ আমরা ইতিমধ্যেই শুরু করেছি। পাণ্ডুয়া স্কুলের ঘটনা উদ্বেগজনক। ওই স্কুলে ঠিক কী ঘটেছে, কোথায় সমস্যা, সেই রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি। জখম শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত। স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। টিফিনের সময় ক্লাসরুমের সিলিং ফ্যান ছিঁড়ে যাওয়ায় আঘাত পেয়েছে কয়েকজন ছাত্রী। তিনজন বর্তমানে সুস্থ আছে। একজন চিকিৎসাধীন আছে। কারও রক্তপাত হয়নি। ক্লাসরুমের ফ্যানগুলি বছরে দু’বার যাচাই করা হয়। ফের তা যাচাই করা হবে। জখম এক ছাত্রীর বাবা রেজ্জাক মোল্লা বলেন, আমার মেয়ে জখম হওয়ার পর স্কুল কর্তৃপক্ষই চিকিৎসার বন্দোবস্ত করেছে। স্কুলের এব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত ছিল। সিলিং ফ্যান এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়মিত যাচাই করা প্রয়োজন। কাজে গাফিলতি ছিল বলেই তো সিলিং ফ্যান ছিঁড়ে পড়েছে। টিফিনের সময় দুর্ঘটনা না হয়ে ক্লাস চলাকালীন ঘটনাটি ঘটলে আরও বেশি শিক্ষার্থী জখম হতো।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দুপুরে টিফিনের সময় নবম শ্রেণির চারজন ছাত্রী ক্লাসরুমে বসে টিফিন খাচ্ছিল। সেই সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ছাত্রীরা জখম হওয়ার পাশাপাশি ভয় পেয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হতেই স্কুলজুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। কর্তৃপক্ষ চার ছাত্রীকেই পাণ্ডুয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রসঙ্গত, স্কুলে সিলিং ফ্যান ছিঁড়ে পড়ার ঘটনা হুগলিতে নতুন নয়। দু’মাস আগেই চুঁচুড়ার একটি স্কুলে একইভাবে সিলিং ফ্যান ছিঁড়ে পড়েছিল। তবে ওই ঘটনায় সেভাবে কেউ জখম হয়নি। অভিভাবকদের দাবি, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় জেলার সব স্কুলের পরিকাঠামো পরীক্ষা করা হোক।