• কোথাও দাম ৫০-এর ঘরে, কোথাও তীব্র হাহাকার! আলু অচিরেই কি বেপাত্তা হবে বাজার থেকে?
    ২৪ ঘন্টা | ২৪ জুলাই ২০২৪
  • অয়ন ঘোষাল: কাঁচা সবজির পরে এবার আলুর পালা। অগ্মিমূল্য সবজির হাত থেকে রেহাই পেতে না পেতেই বাজারে-বাজারে আলু আগুন হতে শুরু করেছে। 

    যেমন গড়িয়াহাট বাজারে। এখানে জ্যোতি আলু শনিবার পর্যন্ত ছিল কেজি প্রতি ৩৫ টাকা। যদিও ১০ দিন ধরে একনাগাড়ে কলকাতার বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালানো টাস্ক ফোর্স জানিয়েছিল সেই দামও বেশি। এবং তখনই দাম আরও কমার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই আশ্বাস ধুয়ে-মুছে সাফ। দাম বেড়েছে, বই কমেনি। এদিকে ফুরোচ্ছে স্টকও। গড়িয়াহাট বাজারের বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, কলকাতার বাজারে হুহু করে কমে আসছে আলুর স্টক। ফলে, যেটুকু স্টক পড়ে আছে তা মহার্ঘ। তাই বুধবার থেকে জ্যোতি আলুর নতুন সম্ভাব্য দাম ৩৫ থেকে বেড়ে ৩৮ হতে চলেছে। এবং এখানেই শান্তি নেই। এই দাম পৌঁছতে পারে ৪০-এর ঘরেও! একই সঙ্গে চন্দ্রমুখী আলু, শনিবার ২০ জুলাই আসা শেষ স্টক অনুযায়ী যার দাম ছিল কেজি প্রতি ৩৫ টাকা, একই কারণে তার দাম বুধবার বেড়ে দাঁড়াল ৪২ থেকে ৪৩ টাকা!

    উত্তরের মানিকতলা বাজারে আলুর ছবিটা ঠিক কেমন?

    জানা গেল, এ বাজারেও স্টক অত্যন্ত কম। আলুর আড়ত প্রায় ফাঁকা। ১০ টির মধ্যে টিমটিম করে চালু মাত্র দুটি দোকান। বাকি দোকানে স্টকের অভাবে ঝাঁপ বন্ধ।

    তবে উত্তরেরই অন্য এক বাজারে ব্যতিক্রমী ছবি। শ্যামবাজার মার্কেটে দেখা গেল স্থানীয় স্টকেই বাজিমাত। সেখানে দিব্য ন্যায্য মূল্যে বিক্রি হচ্ছে আলু। গোটা রাজ্যের মধ্যে এই বাজারে চন্দ্রমুখী আলুর দাম ৩৮ টাকা। জ্যোতি আলুর দাম ৩৪ টাকা।

    কিন্তু কী ভাবে এই উলটপুরাণ? খুচরো বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, এই বাজারের মধ্যেই আছেন স্টকিস্ট। তাঁর কাছে মজুদ বেশ কয়েক কুইন্টাল আলু। এবং এই সংকটের বাজারেও তিনি ফাটকাবাজি করেননি। পাইকারি ন্যায্য দামেই আলু সরবরাহ করছেন খুচরো বিক্রেতাদের। ফলে তাঁরাও ন্যায্য দামে আলু বিক্রি করতে পারছেন। 

    কিন্তু তাহলে কি এক শ্রেণির অসাধু স্টকিস্টদের জন্যই আলুর বাজারে এই হাহাকার? হয়তো কিছুটা তাই। তবে অন্য কারণও আছে। শোনা যাচ্ছে, এ রাজ্যের আলু অন্য রাজ্যে চালান করে দিয়ে এ রাজ্যের ক্রেতাদের বেশি দাম দিয়ে আলু কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে!

    এই মর্মেই টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে ধর্মঘটি সংগঠন 'প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি'কে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন। কী বললেন রবীন্দ্রনাথ? 

    স্পষ্টতই বিরক্ত ক্ষুব্ধ রবীন্দ্রনাথ তাঁদের বলেন, 'এই আচরণ বন্ধ করুন। এরপর সরকার বাধ্য হয়ে কড়া পদক্ষেপ নেবে। তখন বিপদে পড়বেন। হয়তো সংগঠনটাই উঠে যাবে! মুখ্যমন্ত্রী গতকাল নির্দেশ দিয়েছেন। আজকের বৈঠকে সব জট কেটে যাবে। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির এক সদস্যের সঙ্গে আমার নিজের কথা হয়েছে। কোনো কোনো সূত্র থেকে জানতে পেরেছি, বোলপুরের বাজারে ৫০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। সরকার এই আচরণ বরদাস্ত করবে না। আজকের বৈঠকে জট কেটে গেলে ভালো। আলু অন্য রাজ্যে রফতানি করতে কেউ বারণ করছে না। কিন্তু এই রাজ্যের মানুষকে ৪০ টাকা দিয়ে আলু কিনতে বাধ্য করে অন্য রাজ্যে মাল পাঠানো যাবে না। প্রয়োজনে ফের স্বমহিমায় দেখা যাবে টাস্ক ফোর্সকে।'

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)