ঐতিহাসিক ‘ছোট' নৌকার সংরক্ষণে নজর, আনা হচ্ছে কলকাতায়
এই সময় | ২৪ জুলাই ২০২৪
বাণিজ্য এবং মৎস্য শিকার - মূলত এই দুই কাজে ব্যবহৃত হতো ‘ছোট’ নৌকা। শতাব্দী প্রাচীন নৌকার গৌরব ফিরিয়ে আনতে নতুন করে নৌকা বানানো হয় হাওড়ার শ্যামপুরের ডিহিমণ্ডলঘাটে। নৌকাটিকে গুজরাটের ন্যাশনাল মেরিটাইম মিউজিয়ামে রাখার কথা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে পড়েছিল সেটি। অবশেষে প্রতিক্ষার অবসান।
আগামী বৃহস্পতিবার শতাব্দী প্রাচীন ‘ছোট’ নৌকা শ্যামপুরের ডিহিমণ্ডলঘাট থেকে নদীপথে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেবে।সূত্রের খবর, ঐতিহ্যবাহী এই নৌকাটিকে আপাতত কলকাতা বন্দরে এনে রাখা হবে। পরে গুজরাটের ন্যাশনাল মেরিটাইম মিউজিয়ামে নিয়ে যাওয়া হবে। নৌকা তৈরির অন্যতম উদোক্তা ভারতের এনথ্রোপলজি বিভাগের গবেষক স্বরূপ ভট্টাচার্য জানান, মিউজিয়ামটি এখনও তৈরি হয়নি। নদীর পাড়ে নৌকাটি পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কলকাতা বন্দরে এনে রাখা হচ্ছে। তারপরে মিউজিয়াম তৈরি হয়ে গেলে গুজরাটে নিয়ে যাওয়া হবে। স্বরূপ ভট্টাচার্য আরও জানান, এটা একটা সুন্দর অভিজ্ঞতা হল। নৌকাটিকে মিউজিয়ামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এটা কম আনন্দের নয়। গোটা ভারতবর্ষের লোকেরা ন্যাশনাল মেরিটাইম মিউজিয়ামে গিয়ে বাংলার হারিয়ে যাওয়া একটা নৌকা দেখতে পাবেন, এটা ভীষণ আনন্দের ব্যাপার।
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সেখ মাসাদুর রহমান জানান, নৌকাটি অবহেলায় পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যেতে বসেছিল। আরোও আগে নিয়ে গেলে ভালো হত। জানা গিয়েছে, গত ১০ নভেম্বর নিজের হাতে তৈরি ‘ছোট’ জলে নামিয়েছিলেন শ্যামপুরের ডিহিমণ্ডলঘাটের বাসিন্দা বছর ৭০-এর নৌকা শিল্পী পঞ্চানন মণ্ডল। সেইদিন পরীক্ষামূলকভাবে নৌকা জলে ভাসানো হয়েছিল। যদিও তারপর দীর্ঘ প্রায় ৭ মাস পড়ে ছিল এই নৌকা।
নদীর পাড়েই একপ্রকার অবহেলায় পড়ে নষ্ট হতে বসেছিল ঐতিহ্যবাহী এই নৌকা। প্রসঙ্গত, ইংল্যান্ডের সংস্থা ইএমকেপি (এনডেঞ্জার্ড মেটেরিয়াল নলেজ প্রোজেক্ট) এবং ভারতের যৌথ উদ্যোগে হারিয়ে যাওয়া শতাব্দী প্রাচীন এই ছোট নৌকা তৈরি করা হয়েছে। ৩৫ ফুট লম্বা, ৯ ফুট চওড়া এবং ৭/৮ ফুট উচ্চতার এই নৌকা তৈরি করতে সময় লেগেছিল প্রায় একমাস। নৌকা শিল্পী পঞ্চানন মণ্ডলের উদ্যোগে এই নৌকাটি তৈরি করা হয়। বছর ৩০ আগে এই ধরনের নৌকা তৈরি করেছিলেন পঞ্চানন মণ্ডল। নৌকা তৈরির পুরো কাজ দেখাশোনা করছেন ব্রিটেনের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন পি কুপার, হরিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বসন্ত সিন্ধে এবং এন্থ্রোপোলজি বিভাগের গবেষক স্বরূপ ভট্টাচার্য।