কোচবিহার বিমানবন্দরে ল্যান্ডিংয়ে স্যাটেলাইটের ব্যবহার চায় কর্তৃপক্ষ
এই সময় | ২৪ জুলাই ২০২৪
এই সময়: স্যাটেলাইট-এর সাহায্য নিয়ে কোচবিহারে যাতে বিমান নামতে পারে তার জন্য সচেষ্ট হয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।কোচবিহারের মতো দেশের বহু ছোট শহর থেকে নিয়মিত উড়ান পরিষেবা চালু করতে চায় কেন্দ্র। তাতে শুধু সেই শহরই নয়, আশপাশের মানুষদেরও সুবিধা হবে। এই মুহূর্তে কোচবিহার থেকে নিয়মিত ৯ আসনের একটি যাত্রীবিমান চলছে। কিন্তু, চাহিদার তুলনায় তা নগন্য।কারণ, শুধু তো কোচবিহার নয়, আলিপুরদুয়ার, ফালাকাটা, এমনকী ধুপগুড়ি থেকেও তুলনায় কোচবিহার কাছে। তা ছাড়াও কোচবিহার থেকে ধুবড়ি-সহ নিম্ন অসমের ব্যবসায়ীরাও নিয়মিত যাতায়াত করতে পারেন। ফলে, টিকিটের চাহিদা রয়েছে বিস্তর। ৫ কিলোমিটার উপর থেকে রানওয়ে স্পষ্ট দেখতে পেলে তবেই এখন কোচবিহারে নামতে পারেন পাইলট।
এই ভিএফআর বা ভিজ়ুয়াল ফ্লাইট রুল লঙ্ঘিত হলে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে পাইলটকে। তাই, বহু সময়ে খারাপ আবহাওয়ায় দৃশ্যমানতা একটু কমে গেলেই বাধ্য হয়ে পাইলটকে মুখ ঘুরিয়ে অন্যত্র চলে যেতে হয়। অথচ স্যাটেলাইটের সাহায্য নিয়ে নামলে ওই ৫ কিলোমিটারের ভিএফআর রুল কমে এক ধাক্কায় অর্ধেক হয়ে যাবে বলে দাবি বিমানবন্দরের কর্তাদের।
একে জিনএসএস বা গ্লোবাল ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম বলে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, কোচবিহারের খুব কাছেই ভারতীয় বায়ুসেনার হাসিমারা এয়ারবেস রয়েছে। সেখানে নিয়মিত যুদ্ধবিমান ওঠানামা করে। ফলে, কোচবিহারে জিএনএসএস চালুর ক্ষেত্রে বায়ুসেনার সবুজ সঙ্কেত খুবই প্রয়োজনীয়।
এ রাজ্যে এখন কোচবিহার ছাড়া কলকাতা, বাগডোগরা ও অন্ডাল থেকে নিয়মিত উড়ান পরিষেবা রয়েছে। এই তিনটি বিমানবন্দরেই বিমান নামার জন্য আইএলএস বা ইন্সট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম রয়েছে। আইএলএস থাকলে আকাশ থেকে ৯০০ মিটার উপর থেকে রানওয়ে দেখতে পেলেও নেমে আসা যায়।
উল্লেখ্য, ছত্তিসগড়ের জগদলপুর বিমানবন্দরে জিএনএসএস চালু করা হচ্ছে। এখন জগদলপুরের আকাশে উড়ান যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করে কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)। পশ্চিমে জগদলপুর ছাড়ালে হায়দরাবাদ, মুম্বই এটিসি-র এলাকা শুরু হয়। জগদলপুরে জিএনএসএস চালু করতে তাই সম্প্রতি কলকাতার সঙ্গে চুক্তিপত্র সই হয়েছে মুম্বই, হায়দরাবাদ, মুম্বই বিমানবন্দরের।
দেশের আকাশে বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) চূড়ান্ত অনুমতি পেলে সেখানে জিনএসএস চালু হয়ে যাবে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এক কর্তার কথায়, ‘জগদলপুরের এতদিন বিমান নামার সময়ে সমস্যা হচ্ছিল। ৫ কিলোমিটারের দৃশ্যমানতা না পেয়ে বিমান মুখ ঘুরিয়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছিল। এ বার থেকে সেই সমস্যা কমবে।’
ওই কর্তা জানিয়েছেন, বহু পর্যটক নিয়মিত ছত্তিসগড়ে যাতায়াত করেন। সেখানকার সরকারও এই সমস্যার সমাধান চাইছিল। কলকাতার কাছাকাছি দ্বারভাঙা এবং সিকিমের প্যাকইয়ং বিমানবন্দরে এখন এই জিনএসএস চালু রয়েছে। সাধারণত, যে এলাকায় মাটিতে নেভিগেশন-এ সাহায্যকারী যন্ত্র রাখা সম্ভব নয়, সেখানে বিমান তার অবস্থান নির্ণয় করে জিএনএসএস-এর মাধ্যমে। সমুদ্র বা মরুভূমির ক্ষেত্রে ওই সিস্টেম ব্যবহার করা হয়।
বিমানবন্দরের এক কর্তার কথায়, ‘জিএনএসএস-এ জিপিএস ব্যবহার করা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই স্যাটেলাইট থেকে নির্ভুল তথ্য পাওয়া যায় না। এখন সেই নির্ভুল তথ্য পেতে সাহায্য করছে ভারতের জিপিএস এডেড জিও অগমেন্টেড ন্যাভিগেশন বা গগন। ওই ব্যবস্থায় পাইলট জেনে যাচ্ছেন, কোন স্যাটেলাইট থেকে নির্ভুল তথ্য পাওয়া যাবে।’