স্টাফ রিপোর্টার, কাঁথি: গত কয়েক বছর দিঘায় সেই ভাবে দেখা মেলেনি ইলিশের। জালে পমফ্রেট-সহ অন্যান্য মাছ উঠলেও ইলিশ হতাশ করছিল মৎস্যজীবীদের। এবার সেই খরা কাটল কিছুটা। প্রায় সাত টন ইলিশ উঠল তাঁদের জালে। যার ফলে বাজারে ইলিশ দাম কমতে পারে বলে মনে করছেন মৎস্যজীবীদের একাংশ। গত কয়েকদিনে ইলিশ নিলাম হল দিঘার বাজারে। এই বাজারে ডায়মন্ড হারবার থেকে আবার ওড়িশা থেকেও ইলিশ আছে।
দিঘার (Digha) ইলিশ দিঘার বাজারে পাল্লায় উঠছে এবছর এরকম দৃশ্য বিরল। মৎস্যজীবীরা জানাচ্ছেন, শেষ তিন-চার দিনে দিঘায় সাত টন ইলিশ ধরা পড়েছে। আরও বেশ কিছু ট্রলার ফিরছে ইলিশ নিয়ে। ব্যবসায়ীদের আশা, এই পরিমাণে ইলিশ জালে ধরা পড়তে থাকলে বাজারে দাম কমতে পারে।
‘রুপালি শস্য’ দেখা মেলায় মৎস্যজীবী ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটলেও দাম সাধারণের নাগালে না আসায় চিন্তা থেকেই গেল। মোহনা বাজারের মাছ বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ এসেছে পাইকারি বাজারে। তার দর সাড়ে ৫০০ টাকা মতো ছিল। ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি দরে। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১০০০-১১০০ টাকা কেজি দরে। তবে এক কেজি ওজনের ইলিশের দর দেড় হাজার থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। মাছ ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, “জোগান ঠিক থাকলে খুচরো বাজারে ইলিশের দর জনসাধারণের সাধ্যের মধ্যেই থাকবে।”
মৎস্যজীবীদের দাবি, মাছ ধরার মরশুম শুরু হওয়ার পরই একাধিকবার নিম্নচাপের সতর্কতার জেরে সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। তার উপর সম্প্রতি উপকূলে বিমান মহড়ার জন্য দুদফায় ৬ দিন মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। তার মধ্যেও সাত টন ইলিশ ওঠায় আশার আলো দেখছেন মৎস্যজীবীরা।
দিঘা-শঙ্করপুর ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, “সমুদ্র উত্তাল থাকায় অনেক ট্রলার-লঞ্চ ঘাটে ফিরে এসেছে। সবগুলিতেই কমবেশি ইলিশ উঠেছে। তবে কখনও আবহাওয়ার কারণে, কখনও ডিআরডিওর বিমান মহড়ার কারণে মাছ ধরা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা উঠেছে ট্রলারগুলি সমুদ্রে নামবে। আমরা আশা করছি, আগামী কয়েকদিন ইলিশের আমদানি আরও বাড়বে। তখন দাম কমবে।”
দিঘার মৎস্যজীবীরা জানাচ্ছেন, বর্ষার সময় গভীর সমুদ্র থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ডিম পাড়ার জন্য নদী মোহনার মিষ্টি জলের দিকে ছুটে আসে। ইলিশ ধরার সবচেয়ে উপযুক্ত আবহাওয়া হল পুবালি হাওয়ার সঙ্গে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। গত কয়েক দিন ধরে দক্ষিণবঙ্গে মেঘলা আকাশ রয়েছে। হাওয়া অফিসও ইঙ্গিত দিয়েছে, সপ্তাহান্তে বৃষ্টি শুরু হতে পারে দক্ষিণবঙ্গে। ফলে চলতি মরসুমে ইলিশের আমদানি আরও কিছুটা বাড়তে পারে, জোগানও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারে বলেই মনে করছেন মৎস্যজীবীদের একাংশ।