বিধানসভার অলিন্দে পূর্বস্থলীর তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই মর্মে বুধবার তিনি স্পিকারকে চিঠি লিখে নালিশও জানিয়েছেন। যদিও সেই যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তপন চট্টোপাধ্যায়। পালটা শুভেন্দু অধিকারীকে ‘মিথ্যেবাদী’ বলে তোপ দাগেন তিনি।এ দিন বিধানসভায় 'নারী নির্যাতন' নিয়ে আলোচনার দাবি করে বিজেপির পরিষদীয় দল। কিন্তু,অনুমতি না মেলার কারণে এদিন শুভেন্দু সহ অন্যান্য বিজেপি বিধায়করা ওয়াকআউট করেন। এরপর বিধানসভার লবিতে তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এবং তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে। এরপরেই শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, তিনি বিধানসভার মধ্যে 'শারীরিক হেনস্থার' শিকার হয়েছেন। এই মর্মে তিনি স্পিকারকে একটি চিঠিও লেখেন।
সেখানে তিনি লেখেন, 'এ দিন ১২টা ২০ মিনিট নাগাদ নীচের লবিতে পূর্বস্থলীর বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় আমার দিকে দৌড়ে আসেন এবং আমাকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করেন এবং আপত্তিকর মন্তব্য করেন অন্যান্য বিধায়ক-সাংবাদিকদের সামনে।' বিধানসভার মধ্যে বিরোধী বিধায়করা সুরক্ষিত নন, স্পিকারকে দেওয়া চিঠিতে এমনটাও দাবি করেছেন শুভেন্দু। তিনি তপন চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধও করেছেন অধ্যক্ষের কাছে।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের আগে পূর্বস্থলীতে প্রচারে গিয়ে তপনকে তোপ দেগেছিলেন শুভেন্দু। কলকাতায় তপনের ফ্ল্যাট রয়েছে, তাঁর মেয়ে অনিয়ম করে প্রাথমিকে চাকরি পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। পাল্টা পূর্বস্থলী থানায় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তপন। তিনি বলেছিলেন, 'আমার মেয়ে উচ্চ শিক্ষিত। ও নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছে।' এই সমস্ত অভিযোগ এনে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন শুভেন্দু, দাবি করেছিলেন তপন।
এ দিন বিধানসভার মধ্যেই শুভেন্দু অধিকারীকে এই নিয়ে প্রশ্ন করেন তপন। তা নিয়েই বিবাদের সূত্রপাত। যদিও শুভেন্দু অধিকারীকে শারীরিক হেনস্থার যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তপন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'আমার বাড়ির সামনে গিয়ে বলে এসেছে আমি নাকি অসাধু উপায়ে কলকাতায় দুটো ফ্ল্যাট কিনেছি। আমার মেয়ে নাকি অসাধু উপায়ে চাকরি পেয়েছে, থার্ড ডিভিশনে পাশ করেছে। ও ফার্স্ট ডিভিশন পায় মাধ্যমিকে। জোড়া স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আছে ওর। আমার মেয়ের নামে মিথ্যা কথা বলেছেন শুভেন্দু।'
শুভেন্দু অধিকারীর শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তপন বলেন, 'অনেকেই সেখানে ছিলেন। কেউ দেখেনি। ও চিটিংবাজ। মিথ্যুক।' এদিকে ঘটনার প্রেক্ষিতে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'এই ঘটনা নিয়ে তদন্ত হবে।'