• হলদিয়া পুরসভা এলাকার বাসিন্দাদের ভালোমন্দের খোঁজ নিলেন জেলাশাসক
    বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, হলদিয়া: তুমি কোন ক্লাসে পড়? স্কুলে মিড ডে মিল নিয়মিত হয়? আজ স্কুলে কী খাওয়ার ছিল? পর পর প্রশ্নে খানিকটা ঘাবড়ে গেল ছোট্ট ঈশিতা। ঈশিতা বর্মন। হলদিয়া পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে রানিচকে রেললাইনের পাশে বস্তিতে থাকে। স্কুল থেকে ফিরেছে অনেকক্ষণ। রাস্তা ও ঘুপচি ঘরের মাঝখানে ছোট জায়গায় টাইমকলের চাতাল। সেখানে মায়ের সঙ্গে জল আনতে এসেছে। হঠাৎ জেলাশাসক এসে তাকে এভাবে প্রশ্ন করতেই হকচকিয়ে যায়। মুখে রা নেই। উল্টে মায়ের আঁচলের তলায় আশ্রয় খুঁজছে ছোট ঈশিতা। মায়ের মৃদু ধমকের পর জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি ঈশিতার উত্তর পেলেন। ক্লাস ফোরের মেয়েটি এরপর ভয়ে ভয়ে যে প্রশ্নের উত্তরগুলি দিল, তাতেই বস্তিবাসী মেয়েটির স্কুল, মিড ডে মিল, পঠনপাঠন, পরিবার নিয়ে মোটামুটি একটা ধারণা করে নিতে পারলেন জেলাশাসক। এভাবে হলদিয়ার বস্তিবাসীদের কাউকে পুরসভার পরিষেবা, ওয়ার্ডের কাজকর্ম, কারও কাছে পানীয়জল, ডেঙ্গু কর্মীরা নিয়মিত আসে কি না খোঁজ নিলেন জেলাশাসক। জিজ্ঞেস করলেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ঠিকমতো পাচ্ছেন কি না, বা বার্ধক্য ভাতা। 

    বুধবার দুপুরে ঘণ্টা দেড়েক এইচডিএতে উন্নয়ন নিয়ে বোর্ড মিটিংয়ের পর জেলাশাসক সোজা আসেন পুরসভায়। পুর প্রশাসক তথা মহকুমা শাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পুর এলাকার উন্নয়ন ও সমস্যা নিয়ে আলোচনা সারেন। পুরসভায় কাজ করতে কোথায় কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে জানতে চান জেলাশাসক। এরপর বিকেল ৫টা নাগাদ আচমকা বের হন হলদিয়ার বিভিন্ন ওয়ার্ডে উন্নয়ন, পরিষেবা ঠিকমতো বাসিন্দারা পাচ্ছেন কি না তার খোঁজ নিতে। সঙ্গে ছিলেন পুর প্রশাসক, ফিনান্স অফিসার দুলাল সরকার সহ অন্যান্য কর্মীরা। প্রথমে পৌঁছন রানিচকে রেললাইনের পাশের নবপল্লি বস্তিতে। শিশু, পুরুষ, মহিলা, শ্রমিক, দোকানদার নানা ধরনের শতাধিক মানুষের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাখানেক কথাবার্তা বলেন। ২৬ নম্বরের পর যান ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বস্তি ও বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার কথা জানতে চান। বাসিন্দারা অবশ্য জেলাশাসককে চিনতে পারেননি। পুরসভার পরিষেবা নিয়ে অবশ্য বাসিন্দারা তেমন কোনও অভিযোগই করেননি। বরং পরিষেবা নিয়ে প্রশংসা করেন অনেকেই। জেলাশাসক বলেন, পুর এলাকার বস্তিবাসী ও অনেক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকেই ভালো কাজ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। কয়েকটি ছোটখাটো সমস্যার কথাও উঠেছে। পুর প্রশাসককে বিষয়টি দেখতে বলেছি। পানীয় জল, বিদ্যুৎ, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। পুরসভায় ভালো কাজ হচ্ছে বলে বাসিন্দারা সার্টিফিকেট দিয়েছেন। এদিন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে চিরঞ্জীবপুরে এইচডিএর একটি বেহাল পার্ক নিয়ে স্থানীয়রা জানান আধিকারিকদের। জেলাশাসক ওই পার্কটি পুরসভাকে সাজিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। ডেঙ্গু রোধে পুরকর্মীদের আরও বেশি করে এলাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেন। চিরঞ্জীবপুর এলাকায় ড্রেন পরিষ্কার নিয়ে বাসিন্দারা সরব হন। ওই ড্রেনগুলি দ্রুত পরিষ্কার এবং ড্রেনের উপর জবরদখল থাকলে তা সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন জেলাশাসক।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)