সংবাদদাতা, দুর্গাপুর: জীবজগতের ভারসাম্য বজায় রাখতে ও দূষণ রোধে বৃক্ষরোপণ করছেন শিল্পাঞ্চলের একদল মানুষ। গোপালমাঠের প্রায় ২০জন বাসিন্দা সারাবছরই গাছ লাগিয়ে চলেছেন। নিজেদের গাঁটের টাকা খরচ করে গাছের নীচে পথচারীদের বিশ্রামের জায়গাও করছেন। এলাকার অনেকেই বৃক্ষরোপণ করতে এগিয়ে আসছেন। পশুপাখিদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে ফলের বাগান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর পুরসভার গোপালমাঠ লাগোয়া এলাকায় গড়ে উঠেছে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট। পাশে রয়েছে ডিভিসির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। কারখানার ধোঁয়া ও ছাইয়ের দূষণে জেরবার হচ্ছেন বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও শিক্ষক কাজি নাজিমুদ্দিন সহ কয়েকজন দূষণ রুখতে এলাকায় বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নেন। ২০১৭সালে ‘সবুজ বন সবুজ মন’ নাম দিয়ে একত্রিত হন প্রায় ২০জন বাসিন্দা। নিজেদের টাকা ব্যয় করে গাছ কিনে বৃক্ষরোপণ শুরু করেন। গোপালমাঠ শ্মশানকালী মন্দির থেকে রেল কলোনি যাওয়ার প্রায় দু’কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশের ডিএসপি ও রেলের ফাঁকা জমিতে গাছ লাগানো শুরু করেন। সেই গাছ সারাবছর পরিচর্যা করে বড় করে তুলছেন।এলাকার বাসিন্দা প্রসেনজিৎবাবু ও মানস রায় বলেন, ওই রাস্তার আশপাশের জমিতে একসময় পলাশ ও খেজুরের গাছ ছিল। অনেকে ওইসমস্ত গাছ কেটে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে থাকে। একসময় ওই এলাকা কার্যত গাছশূন্য হয়ে যায়। পথচারীরা গ্রীষ্মকালে সমস্যায় পড়তেন। সেখানে দু’টি খেলার মাঠ রয়েছে। গাছ না থাকায় খেলাধুলো করতে সমস্যা হতো। দূষণ রোধে আমরা ওই জায়গায় গাছ লাগানো শুরু করি। বর্তমানে আমরা পরিচর্যা করে হাজারের বেশি গাছ বড় করে তুলছি। প্রায় এক বিঘা জমিতে পশুপাখিদের জন্য ফলের বাগান করেছি।
কাজি নাজিমুদ্দিন ও সঞ্জয় হাজরা বলেন, আম, জাম, কাঁঠাল সহ বিভিন্ন ফল সহ নানা গাছ লাগানো হচ্ছে। রাস্তার দু’পাশের সৌন্দর্যায়নের জন্য অমলতাস, জারুল ও কৃষ্ণচুড়া গাছ লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় বট, অশ্বত্থ, পলাশ, তমাল ইত্যাদি গাছও লাগানো হয়েছে। গাছের তলায় বসার জন্য জায়গা তৈরি করা হয়েছে। এলাকার একাধিক বাসিন্দা তাঁদের প্রয়াত বাবা-মায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ওই বসার জায়গাগুলি করছেন। গাছগুলি পরিচর্যা করার জন্য পুরসভা থেকে জল কেনা হয়। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বৃক্ষরোপণ চলছে।-নিজস্ব চিত্র