চাঁদুর ফরেস্টের পুকুরে স্নান করতে নেমে ছাত্রের মৃত্যু
বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, আরামবাগ: পশু, পাখিদের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য বনদপ্তরের তরফে আরামবাগের চাঁদুর ফরেস্টে খনন করা হয়েছিল পুকুর। সেখানেই স্নান করতে নেমে জলে ডুবে মৃত্যু হল এক স্কুল ছাত্র্রের। মৃতের নাম শুভজিৎ মণ্ডল(১৪)। বাড়ি আরামবাগ শহরের সুজলপুর এলাকায়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন শুভজিৎ স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু, স্কুলে যায়নি। কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে ওই পুকুরে স্নান করতে নামে। তারপরই ডুবে যায়। ঘটনায় পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। পুলিস জানিয়েছে, জলে ডুবে এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভজিৎ আরামবাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা মিঠুন মণ্ডল পেশায় গাড়িচালক। এদিন সকালে শুভজিৎ ভাত খেয়ে স্কুলের জামাকাপড় পরে ব্যাগ নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু, সে স্কুলে যায়নি। তিন বন্ধুর সঙ্গে চাঁদুর ফরেস্টে ঘুরতে চলে আসে। সেখানে একটি ছোট পুকুর দেখে চারজনই স্নান করতে নামে। হঠাৎ শুভজিৎ জলাশয়ের গভীর গর্তের দিকে চলে যায়। সে সাঁতার জানত না। গভীর গর্তে সে তলিয়ে যায়। প্রথমে তার বাকি বন্ধুরা জল থেকে তোলার চেষ্টা করে। না পেরে চিৎকার করতে থাকে। সেই সময় পুকুর থেকে কিছুটা দূর দিয়ে দুই জেলে যাচ্ছিলেন। তাঁরা ছাত্রদের মুখ থেকে ঘটনার কথা শুনে ওই পুকুরে লাফ দেন। তাঁরাই শুভজিৎকে জল থেকে উদ্ধার করেন। জল থেকে ডাঙায় তুলে শুভজিতের পেট থেকে জল বের করার চেষ্টা করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে আরামবাগ থানার পুলিস। শুভজিৎকে উদ্ধার করে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। তার বাবা-মা শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন।
আরামবাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিকাশচন্দ্র রায় বলেন, অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। শুভজিৎ অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের ছিল। মঙ্গল ও বুধবার সে স্কুলে আসেনি। প্রত্যেক অভিভাবকেরই উচিত তাঁদের ছেলে মেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে কি না, সেই বিষয়ে খোঁজ নেওয়া। এবিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। আমরা হাসপাতালে গিয়ে শুভজিতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানিয়েছি।
স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনার পর ওই পুকুর ঘিরে দেওয়ার দাবি জানান। আরামবাগ বনদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, পশু-পাখিদের জল খাওয়ার জন্য পুকুরটি তৈরি করা হয়েছিল। শুভজিতের পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি। গ্রামবাসীরা পুকুরের পাশে বেড়া দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।