ফুটপাত থেকে উৎখাতের আশঙ্কায় সিউড়ির মৃৎশিল্পীরা, সাহায্যের আশ্বাস দিল পুরসভা
বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, সিউড়ি: সিউড়িতে দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী কোনও মৃৎশিল্পালয় নেই। রাস্তার ধারে অথবা অন্যের জমিতে সারাবছর প্রতিমা তৈরি করেন মৃৎশিল্পীরা। প্রতিবারই পুজোর আগে শহরের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় স্থায়ী মৃৎশিল্পালয়ের দাবি তোলেন তাঁরা। কিন্তু তাতে কান দেন না জেলা প্রশাসন বা সিউড়ি পুরসভার আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা। সিউড়ি শহরের আনাচে কানাচে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার ফুটপাত বা কারও ব্যক্তিগত জায়গায় ভাড়া নিয়ে বা অন্য কোনও শর্তে প্রতিমা তৈরি করেন শিল্পীরা। সিউড়ি রামকৃষ্ণ পল্লি এলাকায় বিদ্যাসাগর কলেজ যাওয়ার রাস্তায় বেশ কয়েকজন মৃৎশিল্পী দীর্ঘদিন ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশ পুজোর মরশুমগুলিতে জায়গার অভাবে রাস্তার ফুটপাতে প্রতিমা নির্মাণ করেন বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও স্টেশন মোড়, বড়বাগান ১-এর পল্লি মোড় এলাকাতেও অনেক মৃৎশিল্পী ফুটপাতে শামিয়ানা টাঙিয়ে প্রতিমা তৈরি করেন। উল্লেখ্য, এখন সিউড়ি পুরসভার উদ্যোগে শহরের ফুটপাতগুলিকে দখলমুক্ত করা শুরু হয়েছে। এদিকে শারদৎসব মাত্র দু’মাস বাকি। তার আগে দখলমুক্ত অভিযানের শিকার হবেন এইসব মৃৎশিল্পীরাও। তাঁদের প্রশ্ন, পুরসভা ফুটপাত থেকে সরিয়ে দিলে পুজোর সময় প্রতিমা তৈরির জায়গা পাবেন না তাঁরা। ফলে পুজোর মুখে বরাত ধরা নিয়েও সংশয়ে তাঁরা। তাই প্রতিবছরের মতো এবারও তাঁরা সরকারি উদ্যোগে শহরের মৃৎশিল্পীদের জন্য স্থায়ী মৃৎশিল্পালয়ের দাবি তুলেছেন। মৃৎশিল্পী কমল দাস, সমীর পাল বলেন, আমাদের শহরে মৃৎশিল্পীদের জন্য স্থায়ী জায়গা তৈরির কোনও চিন্তাভাবনা করে না পুরসভা বা প্রশাসন। অথচ পুজোর সময় আমরাই আনন্দের মূল কারিগর হয়ে থাকি। এই শিল্পের জন্য আমাদের কোনও সরকারি সাহায্য দেওয়া হয় না। সরকারি ভাবে এই শিল্পের কাজের জন্য আমাদের ঋণেরও কোনও ব্যবস্থা করা হয় না। এই শিল্পের বেহাল অবস্থা দেখে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আর এই শিল্পে আসতে চাইছে না।
যদিও সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, স্থায়ী ভাবে কুমোরটুলি তৈরির জন্য এখনই কোনও পরিকল্পনা নেই। তবে শহরের মৃৎশিল্পীরা পুজোর আগে প্রতিমা তৈরির জন্য বা বৃষ্টি থেকে বাঁচতে অস্থায়ী ভাবে জায়গা চাইলে আমরা সেই জায়গার ব্যবস্থা করে দেব। তাঁরা আবেদন করলেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।