• জল কিছুটা কমতেই নাগর থেকে দেদার বালি পাচার
    বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, করণদিঘি: যেন কয়েকদিনের বিরতি। বৃষ্টি কমে যাওয়ার ফলে নাগর নদীর জল নামতেই ফের দেদার বালি পাচার শুরু করে দিয়েছে মাফিয়ারা।

    প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে লাহুতাড়া ১ নং গ্ৰাম পঞ্চায়েতের নীলকুঠি গ্ৰামের কাছে সন্ধ্যে থেকে শুরু করে ভোর পর্যন্ত চলছে বালি তোলা। প্রশাসনের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ করে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

    সম্প্রতি প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে বালি তোলার অভিযোগ উঠেছিল। মাঝে পুলিশ প্রশাসন কিছুটা নড়েচড়ে বসায় এবং বৃষ্টির জন্য কিছুদিন পাচার বন্ধ রেখেছিল বালি মাফিয়ারা। এখন দিনের পর দিন রমরমিয়ে চলছে বালি তোলার কাজ। নদীতে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে ট্রাক্টর, ট্রাক। সেই বালি বিহারে পাচার হচ্ছে বোতলবাড়ি রাজ্য সড়ক ও ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কপথে। বিপুল রাজস্ব হারালেও প্রশাসন পাচার বন্ধ করতে উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

    নীলকুঠির ইয়াকুব হোসেন বলেন, ভোররাত থেকে ট্রাক্টর দিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালি তোলা হয়। ট্রাক্টরের যাতায়াতের ফলে রাস্তা খারাপ হচ্ছে। শব্দের দাপটে আমরা রাতে ঘুমোতেও পারছি না। অবৈধভাবে বালি তোলা বন্ধ করার আবেদন জানানো হয়েছে প্রশাসনের কাছে। ব্যবস্থা না নিলে আমরা আন্দোলন করতে বাধ্য হব।

    বাসিন্দাদের আশঙ্কা, যেভাবে নীলকুঠি গ্ৰামের কাছে অবৈধভাবে বালি তোলা হচ্ছে, নদীর গতিপথ বদলে যাবে। এতে চাষের জমি শেষপর্যন্ত নাগর নদীর গর্ভে চলে গেলে নিঃস্ব হবেন চাষিরা। 

    বাসিন্দাদের দাবি, এই এলাকায় বালি মাফিয়াদের এতটাই দাপট, ভূমি দপ্তরের আধিকারিকরা অভিযান চালানোর আগে দশবার ভাবতে হয়। কারণ, বালি পাচার বন্ধ করতে অভিযান চালাতে গেলে করণদিঘির প্রাক্তন বিএলআরও গৌর সরেনের উপর প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছিল মাফিয়ারা। গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি। করণদিঘি থানার পুলিস তখন তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছিল। সেই ঘটনার পর পুলিস ও প্রশাসন কয়েকবার অভিযান চালানোর পর কিছুটা পিছু হঠেছিল বালি মাফিয়ারা। ফের নজরদারিতে ঢিলেঢালা ভাব দেখে পুরোশক্তি দিয়ে ময়দানে নেমেছে তারা। য়ে রাস্তা দিয়ে পুলিস, প্রশাসনের অভিযান হতে পারে, সেখানে ইনফর্মারও রাখছে পাচারকারীরা। একটু গতিবিধি দেখলেই খবর পৌঁছে যাচ্ছে নদীতে বালি তোলার কাজে যুক্তদের কাছে। তখন তারা গাড়ি, লোকজন নিয়ে সেখান থেকে সরে যাচ্ছে। শুরুতেই পাচারকারীদের থামানো গেলে বছরের বাকি সময় পাচার আটকানো মুশকিল হয়ে যাবে বলে মনে করছেন বাসিন্দারা।

    করণদিঘির বিএলআরও সুমিত ভট্টাচার্য বলেন, নাগর নদী থেকে অবৈধভাবে বালি তোলার অভিযোগ রয়েছে। পাচার বন্ধ করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা অভিযান চালাব। বালি বোঝাই ট্রাক্টর আটক করতে পুলিস প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করণদিঘি থানার পুলিস জানিয়েছে, বালি পাচার বন্ধ করতে অভিযান চালানো হবে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)