• কেন্দ্রের বঞ্চনা, ফুঁসছে উত্তর, বাজেটে কেন নেই চা-কথা? আন্দোলনে নামছে তৃণমূল
    বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৪
  • সুব্রত ধর, শিলিগুড়ি: তিন বছর আগের বাজেটে ঘোষিত হাজার কোটি টাকা এখনও অমিল। এবারের বাজেটেও চা বাগানের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ঘোষণা নেই। পর্যটন শিল্পেও দিশা নেই। সবমিলিয়ে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফুঁসছে উত্তরবঙ্গ। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠন এনিয়ে আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করেছে। এর বিরুদ্ধে পাল্টা আসরে নামছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, চা শ্রমিকদের জন্য নতুন যোজনা ‘পিএমসিএসপিওয়াই’ ঘোষণা করা হয়েছে। উভয়পক্ষের এমন বক্তব্য ঘিরে স্থানীয় রাজনীতি সরগরম। 

    উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির অন্যতম মেরুদণ্ড চা শিল্প। পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সে চা বাগানের সংখ্যা অসংখ্য। ইতিমধ্যে চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা প্রাদন, ঘর দিতে চা সুন্দরী প্রকল্প, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ক্রেশ প্রভৃতি চালু করেছে রাজ্য। শ্রমিকদের রেশন দিচ্ছে। কিন্তু, অর্থনৈতিকভাবে ঘোর সঙ্কটে চলা এই শিল্পের জন্য এবার প্রস্তাবিত বাজেটে তেমন কিছুই বরাদ্দ করেনি দিল্লির সরকার। শ্রমিকদের বকেয়া পিএফ এবং বাগানের বকেয়া সাবসিডি মেটানোর কোনও দিশা নেই বাজাটে। 

    এনিয়েই ক্ষুব্ধ তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠন। ইতিমধ্যে আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন, ২০২১-২২ অর্থবর্ষের বাজেট বক্তৃতায় চা শ্রমিকদের কল্যাণে এক হাজার কোটি টাকা প্রদানের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। বাংলার চা বাগানে এক পয়সাও পৌঁছয়নি। এবারের বাজেট নথিতে চা শ্রমিকদের জন্য পিএমসিএসপিওয়াই-এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এভাবে কেন্দ্রীয় সরকার চা শ্রমিকদের বোকা বানাতে পারে না। তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান নকুল সোনার ও আইএনটিটিইউসির দার্জিলিং জেলা সভাপতি (সমতল) নির্জল দে দু’জনেই বলেন, চা বাগানের প্রতি কেন্দ্রের এই বঞ্চনা বরদাস্ত করব না। এর বিরুদ্ধে বাগানে ও রাজপথে জোরদার আন্দোলন হবে। এই কর্মসূচির ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করা হচ্ছে। 

    সিপিএমের শ্রমিক সংগঠনও এনিয়ে আন্দোলনে নেমেছে। সিটু অনুমোদিত চা শ্রমিক সংগঠনের নেতা তথা সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, বাজেটে চা বাগানের জন্য কিছুই নেই। শ্রমিকদের ধোঁকা দিয়েছে কেন্দ্র। এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছি। পথসভা ও মিছিল করছি। 

    যদিও গেরুয়া শিবির বঞ্চনার অভিযোগ মানতে নারাজ। দার্জিলিংয়ের সাংসদ বিজেপির রাজু বিস্তা বলেন, চা শ্রমিকদের জন্য পিএমসিএসপিওয়াই চালু করা হবে। এতে অসম ও বাংলার চা শ্রমিকদের কল্যাণ হবে। বিজেপির মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মন বলেন, এবার বাজেটে মহিলা স্বশক্তিরণে জোর দেওয়া হয়েছে। এর সুবিধা চা বাগানের শ্রমিকরা পাবেন। কাজেই বিরোধীদের তোলা বঞ্চনার অভিযোগ ঠিক নয়। 

    শুধু চা শিল্প নয়, উত্তরবঙ্গের পর্যটন শিল্প নিয়েও বাজেটে কোনও ঘোষণা নেই। ট্যুর অপারেটার সম্রাট সান্যাল বলেন, এবারের কেন্দ্রীয় বাজেট পর্যটন শিল্পে কোনও দিশা দিতে পারেনি। এতে আমরা হতাশ। উত্তরবঙ্গ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সঞ্জয় টিব্রেওয়াল বলেন, বাংলা থেকে কর আদায় করলেও বাংলাকে বঞ্চিত করেছে কেন্দ্র। এটা মানা যায় না।  নিজস্ব চিত্র          
  • Link to this news (বর্তমান)