সংবাদদাতা, মানিকচক: মালদহের মানিকচকে গঙ্গা নদীর ভাঙনের জেরে গোপালপুর হাইস্কুল ও হুকুমতটোলা এসপি প্রাথমিক বিদ্যালয় তলিয়ে যেতে বসেছে। গোপালপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে গঙ্গার ভাঙন। ভাঙন রোধে প্রশাসনের কাছে বারবার দাবি জানালেও এখনও কোনও কাজ হয়নি। ফলে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই আতঙ্কেরই প্রভাব পড়েছে দুই স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের মধ্যে।
মানিকচক ব্লকের অন্তর্গত গোপালপুর হাইস্কুল এই অঞ্চলের একমাত্র উচ্চ বিদ্যালয়। এই স্কুলে ১৪০০ ছাত্রছাত্রী রয়েছে। ১৯৭৩ সালে পুরনো গোপালপুরে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হলেও বেশ কয়েক বছর মধ্যেই গঙ্গা ভাঙনে তলিয়ে যায়। যার ফলে বেশ কয়েক বছর গোপালপুরে কোনও হাইস্কুল ছিল না। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে সহবতটোলায় বাঁধের গা ঘেঁষে নতুন করে স্কুল ভবন তৈরি করা হয়। কিন্তু বর্তমানে ভাঙনের যা পরিস্থিতি তাতে স্কুলটি সঙ্কটের মুখে। স্কুল থেকে এখন মাত্র ৩০০ মিটার দূরে রয়েছে গঙ্গা।
গোপালপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীরেন্দু নারায়ণ মল্লিক বলেন, ভাঙন নিয়ে আমাদের বিরাট সমস্যা। স্কুল স্থানান্তর করার মতো কোনও জায়গা নেই। এই পরিস্থিতিতে স্কুল ভাঙনের মুখে পড়লে বিরাট ক্ষয়ক্ষতি হবে। যেভাবে নদী এগিয়ে আসছে তাতে সমস্যা একদিন হবেই। ছাত্রছাত্রীরা কোথায় যাবে, কোথায় পড়বে, শিক্ষকদেরই বা কী হবে, এনিয়ে চিন্তায় রয়েছি। বিষয়টি আমরা উপরমহলে জানাব।
অন্যদিকে, হুকুমতটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৫১ জন। স্কুল ভবন থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে রয়েছে গঙ্গা। ইতিমধ্যে স্কুল সংলগ্ন জায়গায় থাকা স্থানীয় বাসিন্দারা বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে অন্যত্র সরে গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত কী হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় শিক্ষক থেকে শুরু করে অভিভাবকরা। স্কুলের শিক্ষক মহম্মদ মাবুদ আলাম বলেন, গঙ্গা ভাঙনের জন্য সকালে স্কুল হয়। ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিও কম। বিদ্যালয়ের পাশেই থাকা আস্ত একটি গ্রাম উত্তর হুকুমতটোলা গঙ্গা ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে। এলাকায় আমাদের স্কুল ছাড়া এখন আর বাড়িঘর নেই। যেভাবে ভাঙন হচ্ছে তাতে যে কোনও মুহূর্তে স্কুলটি গঙ্গায় তলিয়ে যেতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ এমাজউদ্দীন বলেন, গোপালপুরে ভাঙন রোধে কেউ কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না। এই স্কুলগুলিও বেশি দিন থাকবে না। মালদহ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান বাসন্তী বর্মন বলেন, গোপালপুরে প্রবল ভাঙন হচ্ছে। আমরা শীঘ্রই পরিদর্শন করে দেখছি হুকুমতটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নিয়ে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া যায় কি না।