• কেন্দ্রের জন্য কিনলেও ধানের ১০ হাজার কোটি পায়নি রাজ্য
    বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৪
  • কৌশিক ঘোষ, কলকাতা: ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা সহ নানা প্রকল্প খাতে ধারাবাহিক বঞ্চনা  তো আছেই। এখন রাজ্যকে ধান কেনার টাকাও দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার! অথচ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের সরকারের হয়েই ধান কেনে রাজ্য। চলতি ২০২৩-২৪ খরিফ মরশুমে এই খাতে রাজ্যের কাছে কেন্দ্রের বকেয়া প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। ধান কেনার পর উৎপাদিত চাল গুদামে ঢুকে গেলে পর্যায়ক্রমে টাকা পাঠানোর কথা কেন্দ্রের। চলতি খরিফ মরশুম শেষ হতে আর মাত্র মাস দু’য়েক বাকি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৩-২৪ খরিফ মরশুমের ধান কেনা বাবদ কোনও টাকা দেয়নি বলে জানিয়েছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। বকেয়া টাকা পেতে একাধিকবার খাদ্যমন্ত্রককে চিঠি দিয়েছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি ফের চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনও জবাব মেলেনি। বাধ্য হয়ে রাজ্য সরকারকেই নিজস্ব তহবিল থেকে চাষিদের ধানের দাম মিটিয়ে যেতে হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ধান বিক্রির তিন-চারদিনের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যায়। 

    গত ৮ এপ্রিল খাদ্যদপ্তর ধান কেনার বিস্তারিত হিসেব কেন্দ্রীয় অডিট সংস্থার কাছে পাঠিয়েছিল। সেখানে বলা হয়, ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে রাজ্য সরকারের বাজেট বরাদ্দ থেকে ৬,৯৫৭ কোটি টাকা খরচ হয়েছে ধান কিনতে। কোন কোন ‘হেডে’ কত টাকা দেওয়া হয়েছে, সেই হিসেবের পাশাপাশি ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে ধান কেনার জন্য কেন্দ্র যে কোনও টাকা দেয়নি, চিঠিতে তাও উল্লেখ করা হয়। এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে ২০২৪-২৫ আর্থিক বছর। কিন্তু পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। সরকারি উদ্যোগে ধান কেনার পরিমাণ এপ্রিলের পর আরও বেড়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বকেয়ার পরিমাণও বেড়ে হয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। চলতি খরিফ মরশুম শেষ হবে ৩০ সেপ্টেম্বর। খাদ্যদপ্তর সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫২ লক্ষ টন ধান কেনা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৩০ লক্ষ টন গিয়েছে সেন্ট্রাল পুলে। 

    অক্টোবর থেকে শুরু হতে চলা নয়া খরিফ মরশুমে ৬৮ লক্ষ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য। এর মধ্যে ৪১ লক্ষ টন ধান সেন্ট্রাল পুল এবং বাকি ২৭ লক্ষ টন স্টেট পুলের জন্য কেনা হবে। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের প্রায় ৬ কোটি রেশন গ্রাহক যে চাল পান, তা সেন্ট্রাল পুল থেকে সরবরাহ করা হয়। এছাড়া, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও স্কুলের মিড ডে মিলের চাল যায় সেন্ট্রাল পুল থেকে। আর স্টেট পুলের চাল সরবরাহ করা হয় রাজ্য সরকারের নিজস্ব রেশন প্রকল্পের আওতাধীন ২ কোটি ৮০ লক্ষ গ্রাহকের জন্য। এর পুরো খরচ রাজ্যই বহন করে। খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী খরিফ মরশুমে সেন্ট্রাল পুলের জন্য ধান কেনার বিষয়টি কেন্দ্রের নির্দেশমতো পিএফএমএস পোর্টালের মাধ্যমেই হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)