দরকার আরও ১০২ কোটি, ১১ বছরেও সম্পূর্ণ হল না রাইটার্স বিল্ডিংয়ের সংস্কার
বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রায় ১১ বছর আগে স্থানান্তরিত হয়েছে রাজ্য সচিবালয় বা প্রশাসনিক সদর। কলকাতার শতাব্দীপ্রাচীন ‘লালবাড়ি’ রাইটার্স বিল্ডিং (মহাকরণ) থেকে হাওড়ার ‘নবান্নে’ উঠে যায় সচিবালয়। তারপর গঙ্গাপাড়ের নীল-সাদা ভবন থেকেই পরিচালিত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, ২০১৩ থেকে শুরু হওয়া রাইটার্স সংস্কারের কাজ শেষ হবে কবে? নবান্নের এক শীর্ষ আমলা বলেন, ‘বিবাদী বাগ থেকে হাওড়া মন্দিরতলায় রাজ্য সচিবালয় স্থানান্তরের জন্য রাজকোষ থেকে কয়েক কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত মহাকরণের সংস্কার খাতেও খরচ হয়েছে আরও কয়েক কোটি। প্রাচীন স্থাপত্য হওয়ার কারণে রাইটার্সের বেশ কিছু অংশ ভেঙে ফেলাটা জরুরি হয়ে পড়েছিল। তবে হেরিটেজ অংশ অর্থাৎ ইংরেজদের তৈরি লালবাড়ি টিকিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী সহ বাছাই কয়েকজন মন্ত্রীর জন্য ঘরও তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু বসবে কে!’ প্রশ্ন ওই দুঁদে আমলার। পূর্তদপ্তরের এক কর্তা বলেন, ‘গত ১১ বছরে ছ’জন মুখ্যসচিব বদল হয়েছেন। রাইটার্স সংস্কার নিয়ে একটি কমিটিও তৈরি হয়েছিল। দীর্ঘদিন সেই কমিটির কোনও কাজ নেই।’ সংস্কারের পর রাইটার্স বিল্ডিংয়ে কী কাজ হবে, তা নিয়েও সন্দিহান এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ওই আধিকারিক।
সূত্রের খবর, পূর্তদপ্তরের সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী রাইটার্স বিল্ডিংয়ের কাজ শেষ করতে আরও প্রায় ১০২ কোটি টাকা প্রয়োজন। এই টাকা রাজ্যের কাছে খুব একটা বড় অঙ্ক নয় বলেই মত প্রশাসনিক মহলের। তবে এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘রাজনৈতিক চাপ থাকলে যে কোনও কাজই গুরুত্ব পায়। এক্ষেত্রে তেমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই বলে কাজ শেষের কোনও তাড়াও নেই। মূলত বার্ষিক মেইনটেন্যান্স ফান্ড থেকেই কাজ চলছে।’
রাইটার্স বিল্ডিং সংস্কারের কাজ তদারকির জন্য মুখ্যসচিবকে মাথায় রেখে একটি ‘হাই পাওয়ার’ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির কাজ ছিল কাজের অগ্রগতির উপর নজর রাখা। মে মাসে বর্তমান মুখ্যসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকার নেতৃত্বে কমিটির একটি বৈঠক হয়। তবে রাইটার্স বিল্ডিংকে ভবিষ্যতে কী কাজে লাগানো হবে, তা নিয়ে তেমন কোনও আলোচনা ওই বৈঠকে হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, সংস্কারের কাজে গতি আনার প্রশ্নেও খুব ইতিবাচক কিছু আলোচনা হয়নি। প্রসঙ্গত, মে মাসে এই বৈঠকের আগে শেষবার কমিটির বৈঠক হয়েছিল ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে।