সুজিত ভৌমিক, কলকাতা: প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডে জেলবন্দি রয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় মাওবাদী নেতা প্রশান্ত বোস ওরফে কিষানদা। তাঁকে নিয়ে এবার চরম সঙ্কটে সিপিআই (মাওবাদী) দল। কারণ, পার্টি চাইলেও যাদবপুরের বিজয়গড়ের ভূমিপুত্র এই মাওবাদীকে নেতাকে আইনি সহায়তা দেওয়া যাচ্ছে না। সেই কারণে তাঁর জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি ভেস্তে যেতে বসেছে। মাওবাদী দলের এক বিশেষ সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে।
মাওবাদী দলের ওই সূত্রের দাবি, প্রশান্ত বোসের ভাই, ভাইপোদের মতো কয়েকজন নিকট আত্মীয় এখনও কলকাতার বিজয়গড়ে বাসবাস করেন। সম্প্রতি দলের শুভানুধ্যায়ীদের তরফে বিজয়গড় নিবাসী ওই নিকটাত্মীয়দের আইনি লড়াইয়ে শামিল হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এর জন্য আর্থিক দায়ভার দলই বহন করবে। আত্মীয়রা এই আইনি লড়াইয়ে শুধু সামনে থাকবেন। কিন্তু সেই প্রস্তাবে আত্মীয়রা সায় দেননি। এতেই সমস্যায় পড়েছে মাওবাদী দলটি। ঝাড়খণ্ডের জেলে গিয়ে দেখা করা থেকে আইনি লড়াইয়ে শামিল হওয়ার জন্য ধৃত মাওবাদী নেতার রক্তের সম্পর্কের অন্তত একজন আত্মীয়কে প্রয়োজন। কারণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঝাড়খন্ড পুলিস ক্রমাগত অসহযোদিতা করে চলেছে এবং এনআইএ-র গোয়েন্দারা বাংলার মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীদের ওপর চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে নিকট আত্মীয়কে ঢাল করে এগতে চাইছিল মাওবাদীরা। তাঁরা মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় সমস্যায় পড়েছে মাওবাদীরা। সব মিলিয়ে, ঝাড়খণ্ডে বন্দি এই প্রবীণ মাওনেতাকে মুক্ত করার বিষয়টি অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
উল্লেখ্য, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ২০২১ সালে ১২ নভেম্বর ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলাতে মাওবাদী নেতা কিষানদা এবং তাঁর স্ত্রী শীলা মারান্ডিকে গ্রেপ্তার করে ঝাড়খণ্ড পুলিস। তারপর থেকেই ওই রাজ্যের জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি। পার্টির সূত্র জানাচ্ছে, চিকিৎসার জন্য গোপনে ঝাড়খণ্ড থেকে পুরুলিয়া হয়ে এ রাজ্যে আসছিলেন কিষানদা। দলের এই গোপন খবর ঝাড়খণ্ড পুলিসের হাতে কীভাবে পৌঁছল, তা নিয়েও দলের অন্দরে প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে দলের একাংশই মনে করে, কিষানদার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা বাংলার নেতাদের কাছ থেকে এই খবর কোনওভাবে ফাঁস হয়েছে।