• নাকের ডগায় টাকা তুলছে কে? ‘বর্তমান’এর খবরের পর খোঁজ শুরু লালবাজারের
    বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ব্রেবোর্ন রোড ও রাধাবাজার লেনের সংযোগস্থলে ট্রাফিক বিধি লঙ্ঘন করলে ‘তোলা’ দিয়ে ছাড় পাচ্ছেন ভ্যান চালকরা। সেই কাণ্ডের মূল পান্ডা কলকাতা পুলিসের হেড কোয়ার্টার ট্রাফিক গার্ডের এক সিভিক ভলান্টিয়ার ‘আলি’। কিন্তু, ইউনিফর্ম পরার ধার ধারেন না তিনি। টি-শার্ট আর জিন্স পরেই প্রকাশ্যে চলে ‘তোলাবাজি’। ‘বর্তমান’-এ খবর প্রকাশের পরই নড়েচড়ে বসল লালবাজার। কে সেখান থেকে ট্রাফিকবিধি ভঙ্গে জরিমানার বদলে বেআইনিভাবে টাকা তুলছে? তা নিয়ে খোঁজখবর শুরু করল লালবাজার। ‘আলি’ নামে ওই ব্যক্তি কে? তিনি নিজেকে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে দাবি করেছেন। যদিও তাঁর সঙ্গে কলকাতা পুলিসের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, এসমস্ত বিষয়ে অনুসন্ধান করছেন উর্দিধারীরা। সিভিক ভলান্টিয়ার হলে তাঁর ইউনিফর্ম নেই কেন? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন খোদ উচ্চপদস্থ কর্তাই।   

    কলকাতা পুলিসের নিয়ম বলছে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের ইউনিফর্ম বাধ্যতামূলক। তাহলে হেড কোয়ার্টার ট্রাফিক গার্ডের সিভিক ‘আলি’ কেন গায়ে উর্দি চাপান না? লোকচক্ষুর আড়ালে টাকা তোলার জন্যই কি এই ব্যবস্থা? খোদ লালবাজার থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে সিভিকের বিরুদ্ধে ‘তোলাবাজির’ প্রসঙ্গে এই প্রশ্নই এখন সবমহলে। সিভিক ভলান্টিয়ার হয়ে খোদ হেড কোয়ার্টার ট্রাফিক গার্ডের অফিসারদের নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন আলি। তিনি বলেন,‘ভ্যানচালকরা গরিব মানুষ। কী করে ট্রাফিক বিধিভঙ্গের অভিযোগে ১২০ টাকা দেবেন। তাই অফিসাররাও কেউ জোর করেন না। বদলে ১০ টাকা প্রতিদিন দিতে হয় ভ্যানচালকদের। অফিসাররাই এই রেট ঠিক করে দিয়েছেন। সব ভ্যান চালকই তা জানেন। ভ্যানচালকরাও পুলিসকে দেখেন, পুলিসও ভ্যানচালকদের দেখেন।’

    ইউনিফর্ম পরা প্রসঙ্গে সিভিকের অকপট দাবি, ‘আমাদের উর্দি পরতে লাগে না। অফিসারদের কারও এবিষয়ে কোনও আপত্তি নেই।’ ‘বর্তমান’ তাঁকে প্রশ্ন করে, ‘বেআইনিভাবে এই টাকা তোলার ঘটনা কলকাতা পুলিসের কোনও উচ্চপদস্থ কর্তার নজরে এলে তো আপনার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে কী করবেন?’ সিভিকের জবাব, ‘এখানে কেউ আসবেন না। আর যদি কেউ আসেন তো কী আর করা যাবে। আমরা তো সিভিক। আমাদের তো আর সার্ভিস বুক নেই।’

    এপ্রসঙ্গে, কলকাতা পুলিসের ডেপুটি কমিশনার (ট্রাফিক) শ্রীকান্ত জগন্নাথরাও বলেন, ‘ট্রাফিক বিভাগের অধীনস্ত যত সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের ইউনিফর্ম রয়েছে। সেটি পরেই ডিউটি করতে হয়। কিন্তু, উনি আদৌ সিভিক কি না, তা দেখতে হবে।’ উল্লেখ্য, ‘বর্তমান’কে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার একাধিকবার জানিয়েছেন, তিনি হেড কোয়ার্টার ট্রাফিক গার্ডে কর্মরত। শুধু তাই নয়, যে সার্জেন্টের অধীনে তিনি নথিভুক্ত তাঁর নামও জানিয়েছেন ‘আলি’।
  • Link to this news (বর্তমান)