সংবাদদাতা, বারুইপুর: স্কুলের সামনেই বারুইপুর-ক্যানিং রোড। প্রায় রোজই ঘটে দুর্ঘটনা। বেপরোয়া গতিতে চলে বাইক, চালকদের অনেকেই হেলমেটবিহীন। অভিনবভাবে তাঁদের সবক শেখাতে ও ট্রাফিক সচেতনতার বার্তা দিতে এবার পথে নামল ওই স্কুলের পড়ুয়ারা। ছিলেন স্কুল পরিদর্শক থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকারাও।
হেলমেটবিহীন বাইকচালকদের হাতে ছাত্রছাত্রীরা ধরিয়ে দিল গোলাপ ফুল। এই কাজ করতে বারুইপুরের রামনগর নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের আকাশ, ঋতু, সৃজা, তুষার, শবনম, সূর্য, মৈত্রেয়ীরা হাতে রীতিমতো প্ল্যাকার্ড নিয়ে নামে রাস্তায়। তাতে ছিল, ‘খোকা খুকু যায়, হেলমেট কোথায়।’ আবার কোনওটিতে লেখা, ‘লাল সবুজে ভুল করো না, ট্রাফিক আইন আর ভেঙো না।’ এও লেখা, ‘আগে গেলে বাঘে খায়, ওভারটেক একদম নয়’, ‘চুল থেকে সরিয়ে হাত, হেলমেটটা মাথায় থাক’– এইরকম মজাদার ছড়ায় ভরা ছিল পড়ুয়াদের সচেতনতার বার্তা।
এই উদ্যোগ মূলত নিয়েছিলেন বারুইপুর দক্ষিণ চক্রের স্কুল পরিদর্শক কৃষ্ণেন্দু ঘোষ। তাঁরই পরামর্শে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পারমিতা মল্লিক, সহকারী শিক্ষিকা সোমা ভট্টাচার্যরা ছাত্রছাত্রীদের তৈরি করে এদিন এই অভিনব উদ্যোগ নেন। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও এমন কর্মসূচি নিয়ে খুশি। এক চালক কানে ফোন নিয়ে চালাচ্ছিলেন বাইক। তিনি এসে ছাত্রছাত্রীদের প্ল্যাকার্ড দেখে দাঁড়িয়ে পড়লেন। তাঁকে সতর্ক করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, কেন হেলমেট পরা আবশ্যক।
এদিন ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মধুমিতা দাসও। তিনি বলেন, স্কুলের সামনে হাম্প না থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। বাইক দুর্ঘটনাই বেশি হয়। তবে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে স্কুলের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। অন্যদিকে, স্কুল পরিদর্শক কৃষ্ণেন্দু ঘোষ বলেন, বাইকচালকদের একটা বার্তা দেওয়া হল ছাত্রছাত্রীদের মাধ্যমে। এমন উদ্যোগ আগামী দিনে আরও নেওয়া হবে। এছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধেও ছাত্রছাত্রীরা অংশ নেবে। তাঁদের মাধ্যমেই সমাজকে দেওয়া হবে বার্তা। আর প্রধান শিক্ষিকা পারমিতা মল্লিক বলেন, বাইকের গতি নিয়ে অভিভাবকরা প্রায়ই অভিযোগ করতেন। তাই বেপরোয়া হেলমেটবিহীন বাইকচালকদের ছাত্রছাত্রীদের মাধ্যমে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হল। নিজস্ব চিত্র