• মমতার 'আশ্রয়' প্রতিশ্রুতি জঙ্গিদের সাহায্য করবে, তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ বাংলাদেশের
    আজ তক | ২৫ জুলাই ২০২৪
  • বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে হাসিনা সরকার। সূত্রের খবর, প্রতিবেশী দেশ থেকে বলা হয়েছে, এমন ঘোষণার সুযোগ নিতে পারে জঙ্গিরা। গত ২১ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের 'শহিদ দিবস' সমাবেশে বক্তৃতা করার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে হিংসা বিধ্বস্ত বাংলাদেশের মানুষ যদি আমাদের দরজায় কড়া নাড়ে, তাঁর সরকার আশ্রয় দেবে।

    কী বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
    মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে "আমি বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছু বলতে পারি না কারণ এটি অন্য দেশ এবং কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে কথা বলবে, তবে অসহায় মানুষ (বাংলাদেশ থেকে) যদি বাংলার দরজায় কড়া নাড়ে, আমরা তাদের আশ্রয় দেব। এছাড়াও রাষ্ট্রসংঘের একটি প্রস্তাবও আছে যে প্রতিবেশীরা শরণার্থীদের সম্মান করবে।"

    সোশ্যাল মিডিয়াতেও বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে
    তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী পরে  X-এ একটি পোস্টে এই প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। "শতাধিক শিক্ষার্থী এবং অন্যরা সঙ্কট-বিধ্বস্ত বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গ/ভারতে ফিরে আসছে। আমি আমার রাজ্য প্রশাসনকে প্রত্যাবর্তনকারীদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য বলেছি। উদাহরণস্বরূপ, প্রায় ৩০০ জন শিক্ষার্থী হিলি  সীমান্তে পৌঁছেছে এবং বেশিরভাগই নিরাপদ। তারা তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে চলে গেছে, তবে তাদের মধ্যে ৩৫ জনের সাহায্যের প্রয়োজন ছিল এবং আমরা তাদের মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেছি।"

    তীব্র আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ
    সূত্রের খবর, ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের  মন্তব্যে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশ বলেছে, এই ধরনের মন্তব্য, বিশেষ করে উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়ার আশ্বাস, এমন ঘোষণার সুযোগ নিতে অনেক মানুষকে, বিশেষ করে জঙ্গি ও দুর্বৃত্তদের প্ররোচিত করতে পারে। সংবাদসংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সূত্র জানিয়েছেন যে ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের (মুখ্যমন্ত্রী) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনের কাছে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশ সরকার বলেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ট্যুইট করেছেন, সেটা প্ররোচনামূলক এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মিথ্যা বিষয় আছে সেই ট্যুইটে।’

    এছাড়াও, বাংলাদেশ হাইকমিশনকে জানিয়েছে যে তারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্য "বিভ্রান্তিকর"। বাংলাদেশ সরকার আরও বলেছে যে মমতা ব্ন্দ্যোপাধ্যায়  রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাবে যে রেফারেন্স দিয়েছেন তা দেশে বৈধ নয়। মঙ্গলবার বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে আপত্তি জানিয়েছিলেন। এএনআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই সূত্র বলেছেন যে ‘রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাব নিয়ে এক্সে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টে যে বিষয়টির উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে সেরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছে ওরা (শেখ হাসিনা সরকার)। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ সরকার বলেছে, মমতা যে মন্তব্য করেছেন, বিশেষত মানুষকে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে তিনি যে মন্তব্য করেছেন, তাতে অনেকে প্ররোচিত হতে পারে। বিশেষত এরকম মন্তব্যের সুযোগ কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে প্ররোচিত হতে পারে জঙ্গি এবং দুষ্কৃতীরা।’

    বাংলাদেশ ভারত সরকারকে একটি নোট দিয়েছে
    স্থানীয় মিডিয়ার সঙ্গে  কথা বলার সময়, মাহমুদ বলেছেন, "পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি যথাযথ সম্মান রেখে, যার সঙ্গে আমাদের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, আমরা এটি পরিষ্কার করতে চাই যে তাঁর মন্তব্যে বিভ্রান্তির অনেক সুযোগ রয়েছে, তাই আমরা সরকারকে একটি নোট দিয়েছি।" প্রসঙ্গত  বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সহিংস বিক্ষোভ দেখা গেছে, কিছু মিডিয়া রিপোর্টে মৃতের সংখ্যা ১৮৪ জনের মতো বলে দাবি করা হয়েছে ।

    সহিংস বিক্ষোভের মধ্যে ইন্টারনেট নিষিদ্ধ ছিল
    গত সপ্তাহ থেকে দেশব্যাপী ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট ছিল, যা বাংলাদেশের তথ্য প্রবাহকে প্রভাবিত করেছে। গত মঙ্গলবার রাতে সীমিত সংযোগ পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল, ব্যাংক, প্রযুক্তি সংস্থা এবং মিডিয়া আউটলেটগুলির মতো সংস্থাগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে।
  • Link to this news (আজ তক)