শিবভক্তদের অন্যতম তীর্থক্ষেত্র কেদারনাথ ধাম। উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলার ১১,৭৫৯ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত কেদারনাথ মন্দির। কেউ কেউ মনে করেন, ভগবান শিব তাঁর জটা থেকে এখানেই গঙ্গার সৃষ্টি করেছিলেন। তাই শিব ভক্তদের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এই তীর্থক্ষেত্র। তবে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এই তীর্থক্ষেত্র বছরের মধ্যে প্রায় ৬ মাস বরফে ঢাকা থাকে। তখন বন্ধ রাখা হয় এই মন্দির।এরপর আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে, সাধারণত মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত তীর্থযাত্রীদের জন্য মন্দির খোলা রাখা হয়। তবে ৬ মাস খোলা থাকলেও কেদারনাথ মন্দির দর্শণ করতে যেতে পারেন না অনেকেই। কারণ বাবা কেদারনাথকে দর্শণ করতে গেলে একদিকে যেমন যাতায়াতের জন্য খরচ লাগে, তেমনই শারীরিক সক্ষমতারও প্রয়োজন হয়। আর তাই যাঁরা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে এখনও পর্যন্ত কেদারনাথে যেতে পারেননি, তাঁদের জন্য এবার সেই আদলে মন্দির দেখার সুযোগ বীরভূমে।
এবার উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ মন্দিরের আদলেই মন্দির তৈরি হল বীরভূমের বোলপুরে। সেখানে পুজো দেওয়ার পাশাপাশি সেলফি তুলতেও ভিড় জমাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বোলপুরের মকরমপুরের ভক্তি বেদান্ত আশ্রম চত্ত্বরেই তৈরি করা হয়েছে এই মন্দির। কেদারনাথ মন্দিরের উচ্চতা ৪৭ ফুট হলেও এই মন্দিরের উচ্চতা রাখা হয়েছে ৪৪ ফুট। প্রায় ৬ হাজার ৪০০ বর্গফুট জায়গা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই মন্দির। আর মন্দিরের ভিতরে রয়েছে শিবলিঙ্গ ।
এই প্রসঙ্গে নাগা সন্ন্যাসী প্রেমানন্দ গিরি বলেন, 'আমি প্রায় প্রতি মাসেই একবার কেদারনাথ ধাম যাওয়ার চেষ্টা করি। এমনকী মূল মন্দির বন্ধ থাকে বছরের যে সময়, সেই সময়েও আমি কেদারনাথ যাই। কেদারনাথ মন্দিরের এক পুরোহিত আমায় বলেন, প্রতি মাসে বাবার কাছে একবার আসার থেকে বাবার মন্দিরই তোমার ওখানে স্থাপন কর। সেই থেকেই এই চিন্তাভাবনা। ২০২২ সালে এই মন্দির তৈরির কাজ শুরু হয়। বর্তমানে তা শেষ হয়েছে এবং এখন প্রচুর মানুষ এই মন্দির দেখতে ও পুজো দিতে ভিড় জমাচ্ছে। বিশেষত এখন যেহেতু শ্রাবণ মাস চলছে তাই বাবার মাথায় জল ঢালতেও আসছেন অনেকে। এমনকী যে সমস্ত পর্যটকরা বোলপুর ঘুরতে আসছেন, তাঁরাও একবার দর্শন করে যাচ্ছেন এই মন্দির।' বলতে গেলে বোলপুরের নতুন দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে এই 'কেদারনাথ' মন্দির।