গহন জঙ্গলের মধ্যে সবুজ রঙা বাংলো, পর্যটকদের অন্যতম তীর্থস্থান হলং বাংলো কয়েক সপ্তাহ আগে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। বাংলোটিকে পুনর্নির্মাণ করার দাবি উঠেছিল বিভিন্ন মহল থেকে। এবার পর্যটকদের জন্য সুখবর। পুজোর পরে খুলে দেওয়া হতে পারে হলং বাংলো। আপাতত তা সংস্কারের কাজ করছে বন দফতর। রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বুধবার বিধানসভায় জানান, হলং বাংলোর স্থাপত্যশৈলী অটুট থাকতে চলেছে।গত ১৮ জুন ভয়ঙ্কর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় জলদাপাড়ার এই ঐতিহ্যশালী বাংলো। এ বাংলোর দেওয়ালজুড়ে ছিল ঐতিহ্যের ছাপ, বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির কাঠের তৈরি আসবাব। পর্যটকদের কাছে হলং বাংলো ছিল আবেগ এবং ভালোবাসার।
প্রতি বছর নিয়ম মেনেই ১৫ জুন থেকে হলং বাংলো তিন মাসের জন্য বন্ধ থাকে। সেই সময় এসি, গিজার, আলো ইত্যাদির কাজ চলত। বিদ্যুৎ সংযোগ অবশ্য ছিল। গত ১৮ জুন রাতে অগ্নিকাণ্ডের জেরে ভস্মীভূত হয়ে যায় এই বাংলো। কী ভাবে আগুন লাগল? তা খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের তরফে একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছিল। সেই তদন্ত কমিটির দেওয়া রিপোর্ট মোতাবেক, 'এসি থেকে নয়, বরং শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে হলং বাংলোয়, এই রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে।’
প্রাথমিকভাবে এই ঘটনায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছিল, তবে তা খারিজ করে দেয় বন দফতর। অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি বাংলোটিকে সাজিয়ে দেওয়ার ভাবনার কথাও জানানো হয়েছিল বনদফতরের পক্ষ থেকে। এবার পর্যটকদের জন্য সুখবর। বাংলোটি পুজোর পর সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে। এতদিন হলং বাংলোর বুকিং থেকে শুরু করে ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব ছিল পর্যটন দফতরের উপর। এখন থেকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বন দফতরকে।
উল্লেখ্য, অসম এবং অরুণাচল প্রদেশের 'স্টেট ট্রি' হলং। যার বিজ্ঞানসম্মত নাম ডিপটেরোকার্পাস রেটাসাস। মোরান উপজাতিদের বিশ্বাস, এই গাছ অত্যন্ত পবিত্র। আর এই হলং কাঠ দিয়েই তৈরি হয়েছিল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বনবাংলোটি। আর তার নামকরণ করা হয়েছিল এই গাছের নামে।
পরবর্তী সময়ে অবশ্য হলং বাংলোর সংস্কার হয় শিশু-সেগুন কাঠ দিয়ে। ১৯৬৭ সালে ওই বাংলোটি তৈরি হয় হলং নদীর তীরে। বাংলোর নামকরণ ঠিক কী ভাবে? তা নিয়ে অবশ্য দ্বিমত রয়েছে। অনেকেই বলেন হলং নদী থেকে বাংলোটির নামকরণ করা হয়েছে।