• বিভিন্ন জেলার মূর্তি কারবারিদের সুড়ঙ্গ তৈরি করে দিয়েছিল সাদ্দাম, জেরায় দাবি আফতাবের
    বর্তমান | ২৬ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির ‘মূর্তি মাফিয়া’ সাদ্দাম সর্দারের প্রতারণার জাল ছড়িয়ে রয়েছে গোটা রাজ্যে। দুষ্প্রাপ্য মূর্তির টোপ দিয়ে বিভিন্ন জেলায় জালিয়াতি ব্যবসা চালানো একাধিক চক্রের সঙ্গে তার যোগসূত্র মিলেছে। বিভিন্ন জেলায় থাকা চক্রের সদস্যরা সাদ্দামের কাছে লোক পাঠাত। প্রয়োজনে তাদের নানা পরামর্শ দিত সাদ্দাম। সাদ্দামের সহযোগী আফতাবকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এই কারবারে জড়িত একাধিক অভিযুক্তকে টাকা সহ বিভিন্ন সামগ্রী লুকিয়ে রাখার জন্য সুড়ঙ্গ তৈরির বুদ্ধি দিয়েছিল সাদ্দাম। এমনকী সে নিজে একাধিক জেলায় মিস্ত্রি নিয়ে গিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করে দিয়ে এসেছে। কোন কোন জেলায় সে আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যানেল তৈরি করেছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। 


    সাদ্দামের মোবাইল ঘেঁটে তদন্তকারীরা বেআইনি অ্যান্টিক চক্রের একাধিক কারবারির খোঁজ পাচ্ছেন। যারা তারা সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। তার কাছে মাঝেমধ্যেই আসত। নতুন কী টোপে প্রতারণা করা যায় তা নিয়ে কথাবার্তার নথিও পাচ্ছেন অফিসাররা। তদন্তকারীদের কাছে আসা খবর অনুযায়ী, দুষ্প্রাপ্য মূর্তি, সোনা বা ইউরেনিয়ামের টোপ দিয়ে টাকা হাতানোর চক্র মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দুই ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, কোচবিহার সহ বিভিন্ন জেলায় সক্রিয় রয়েছে। কয়েকজনের সঙ্গে আবার নেপালের অ্যান্টিক কারবারিদেরও যোগাযোগ রয়েছে। প্রতারণা ব্যবসা চালাতে গিয়ে অন্য জেলায় সক্রিয় এই গ্যাংয়ের পান্ডাদের সঙ্গে সাদ্দামের পরিচয় হয়। তদন্তে উঠে আসছে, কুলতলির এই মাফিয়ার কাছে কষ্টিপাথরের মূর্তি সহ দুষ্প্রাপ্য বেশকিছু মূর্তি আসত। সেগুলি ভিন রাজ্যের কারবারিদের কাছেও গিয়েছে। তাদের মাধ্যমে ভালো দামে বিক্রি হয়েছে বিদেশে। বিভিন্ন জেলার কারবারিদের সাদ্দাম জানিয়েছিল, তার কাছে দুষ্প্রাপ্য কিছু ধাতু রয়েছে। সেগুলির খরিদ্দার পেলে তার কাছে পাঠিয়ে দিতে। সেইমতো তারা একাধিক ব্যক্তিকে পাঠিয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এই সমস্ত ব্যক্তিদের সুড়ঙ্গে আটকে রেখে টাকা আদায় করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে তদন্তকারীরা। যদিও জেরায় সাদ্দাম দাবি করে আসছে, এই সুড়ঙ্গ সে ব্যবহার করেনি। তদন্তকারীদের বক্তব্য, আসল সত্য আড়াল করার চেষ্টা করছে অভিযুক্ত। সেই কারণে তার ভাইকে হাতে পাওয়া জরুরি। পলাতক ওই অভিযুক্ত সুড়ঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে রাখত বলে খবর। তাই তাকে ধরা গেলে সুড়ঙ্গে কী কাজ হতো তা জানার পাশাপাশি বেআইনি অস্ত্র ব্যবসার বিষয়েও জানা যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।   
  • Link to this news (বর্তমান)