নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: নাবালিকাদের ভুল বুঝিয়ে যৌন র্যাকেটে নামানো হচ্ছে। বিভিন্ন জেলা থেকে তাদের এনে হোটেলের মধ্যে রাখা হচ্ছে। তাদের কাজে লাগিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা লুটছে এক শ্রেণির হোটেল ব্যবসায়ী। বুধবার বর্ধমানের ফাগুপুরের কাছে একটি হোটেল থেকে সাতজনকে পাকড়াও করে পুলিস এমন তথ্য পেয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, ওই হোটেল থেকে এক নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে প্রলোভন দেখিয়ে হোটেলে রাখা হয়েছিল।
পূর্ব বর্ধমানের পুলিস সুপার আমনদীপ বলেন, হোটেল মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পকসো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। হোটেলের লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আর কে বা কারা যুক্ত রয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই হোটেলে উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নাবালিকাদের ভুল বুঝিয়ে আনা হতো। এমনকী বাংলাদেশ থেকেও মেয়েদের এনে রাখা হতো। কীভাবে চলত এই কারবার? এক পুলিস আধিকারিক বলেন, সেখানে যৌন র্যাকেট চলত বলে বাইরে থেকে বোঝা যেত না। ওই হোটেলের নীচের তলায় খাবারের ব্যবস্থা ছিল। সেখানে সাধারণ ক্রেতারা খাওয়া-দাওয়া করতেন। হোটেলের দোতলায় যৌন আসর বসত। চার থেকে পাঁচটি ঘরে মেয়েদের রাখা হতো। সেখানে নাচের আসর বসানো হতো। কোনও নাবালিকা বা যুবতী অশ্লীলভাবে নাচতে না চাইলে মারধর করত। হোটেলের রুমেই মদ, গাঁজা সহ বিভিন্ন ধরনের নেশার সামগ্রী পৌঁছে যেত। সন্ধ্যা থেকে সারারাত ধরে মধুচক্র চলত বলে অভিযোগ। এলাকার লোকজনও বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ ছিল। বিষয়টি বর্ধমান থানার পুলিস জানার পরই অভিযান চালায়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ধমান শহরের নবাবহাটের অনেক হোটেলে এই ধরনের আসর বসছে। সেখানেও নাচের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে যুবকরা হোটেলে আসছে। নাবালিকা মেয়েদের এখানকার হোটেলগুলিতেও আনা হয় বলে অভিযোগ।
এক পুলিস আধিকারিক বলেন, বিভিন্ন জেলার নাবালিকাদের ভুল বুঝিয়ে হোটেলে আনার পিছনে একটি চক্র কাজ করছে। তাদের সম্পর্কেও খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। ফাগুপুরে হোটেল থেকে ধৃতরা কয়েকজন দালালের নাম জানিয়েছে। তাদের কয়েকজন এলাকা থেকে ফেরার রয়েছে। ওই হোটেল মালিক প্রতি রাতে কয়েক লক্ষ টাকা আয় করেছে। কেউ যাতে অশান্তি পাকাতে না পারে তারজন্য সে বাউন্সার রেখেছিল।