কেতুগ্রামে বন্ধ সাবমার্সিবল পাম্প, ৩ বছর হচ্ছে না চাষ
বর্তমান | ২৬ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, কাটোয়া: কেতুগ্রামের বিল্বেশ্বর ও চরখি মৌজায় সাবমার্সিবলের বিদ্যুতের বিল মেটানো হলেও সংযোগ দিচ্ছে না বিদ্যুৎদপ্তর। প্রায় ১৮০বিঘা জমিতে তিন বছর ধরে চাষ বন্ধ রয়েছে। বর্ষার মরশুমেও চাষিরা জলের অভাবে বীজতলা তৈরি করতে পারেননি। চরম সমস্যায় পড়ছেন চাষিরা। তাঁদের অভিযোগ, বারবার বিদ্যুৎদপ্তরে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেতুগ্রাম-২ ব্লকের একাংশের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে অজয় নদ। চরখি এলাকায় প্রায় তিন কিমি অজয়ের বড় বাঁধ রয়েছে। আর সেই বাঁধের ডানদিকের জমিগুলিতে সেচের সমস্যা তৈরি হয়েছে। বর্ষায় জমিগুলি প্লাবিত হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েন চাষিরা। তবে গ্রীষ্মের মরশুমে অজয়ে জল থাকে না। তখন সেচের বিকল্প রাস্তাও থাকে না। বিল্বেশ্বর ও চরখি মৌজায় প্রায় পনেরো বছর ধরে পাঁচটি সাবমার্সিবল রয়েছে। স্থানীয় কৃষি বিকাশ দলের সদস্যরা সেগুলি পরিচালনা করেন। একটি ট্রান্সফর্মার থেকে এই পাঁচটি সাবমার্সিবলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হতো। সেখানে প্রায় ১৮০বিঘা জমিতে চাষ হতো। ওই ট্রান্সফর্মারটি দু’বছর আগে পুড়ে যায়। পরে ট্রান্সফর্মার লাগিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় চাষি হরিময় মণ্ডল, বিশ্বজিৎ পাল বলেন, নতুন ট্রান্সফর্মার লাগিয়ে দেওয়ার ছ’মাস পরেই আবার চারটি সাবমার্সিবল পাম্পের সংযোগ কেটে দিয়ে চলে যায় বিদ্যুৎদপ্তর। তখন আমরা জানতে পারি ওই চারটি সাবমার্সিবল পাম্পের মধ্যে কোনওটায় ৪১হাজার, কোনওটার আবার ৬০হাজার টাকা, এমনকী এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিদ্যুতের বিল বকেয়া। এরপর বিদ্যুৎদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে আমরা দু’টি সাবমার্সিবলের বিল এবছর ১৭মে মিটিয়ে দিই। কিন্তু দু’টি সাবমার্সিবল পাম্পের সংযোগ এখনও দিচ্ছে না। আমরা তিন বছর ধরে ওই মৌজায় চাষের কাজ শুরু করতে পারছি না। বারবার বিদ্যুৎদপ্তরে যাচ্ছি। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হচ্ছে না। কাটোয়া ডিভিশনের বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার রাহুল আগরওয়াল বলেন, চাষিদের সঙ্গে কথা হয়েছিল চারটি সাবমার্সিবলের মধ্যে অন্তত তিনটির বকেয়া বিল জমা দিতে। তাহলেই লাইন পুনরায় জুড়ে দেওয়া হবে।
আরও জানা গিয়েছে, চরখি ও বিল্বেশ্বর মৌজায় ধান সহ বেগুন, আলু সহ নানা সব্জির চাষ করেন চাষিরা। কিন্তু সেচের সমস্যা থাকায় সব্জি চাষও বন্ধ রয়েছে। আবার আমন চাষের সময় এলেও চাষের কাজ শুরু করতেই পারেননি বহু কৃষক। তাঁরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। চাষিরা বলেন, দুই মৌজায় কারও তিন বিঘা কারও আবার ১৮বিঘা জমি রয়েছে। শুধু পর্যাপ্ত সেচের অভাবে চাষ করা যাচ্ছে না। চাষ ছাড়া আমাদের সংসার চলবে কীভাবে বুঝতে পারছি না।