নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: লোকসভা নির্বাচনে চাপড়া বিধানসভায় রেকর্ড লিড পেয়েছেন মহুয়া মৈত্র। দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হয়ে তাই চাপড়া থেকেই উন্নয়নযজ্ঞ শুরু করেছেন তিনি। চাপড়াবাসীর দীর্ঘদিনের বাস স্ট্যান্ডের দাবি মেটাতে চলেছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। সাংসদ তহবিলের প্রায় এক কোটি টাকা খরচ করে সেই বাস স্ট্যান্ড তৈরি করা হবে বলে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ডিপিআর তৈরি হয়ে গিয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই সেই কাজ শুরু হবে বলে শোনা যাচ্ছে। মহুয়া মৈত্র বলেন, চাপড়ার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বাস স্ট্যান্ডের। চাপড়ার মানুষ সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। এখানে সত্যিই একটা বাস স্ট্যান্ডের দরকার রয়েছে। তাই সাংসদ তহবিলের টাকায় চাপড়ার বাস স্ট্যান্ড করা হচ্ছে।
কৃষ্ণনগর-করিমপুর রাজ্য সড়কের উপর অবস্থিত ব্যস্ত, জনবহুল এলাকা চাপড়া। অথচ সেই এলাকাতেই নেই স্থায়ী বাস স্ট্যান্ড। যে কারণে বাজারের উপরেই রাস্তার ধারে বাস দাঁড়িয়ে থাকে। রাজ্য সড়কের উপরেই বাসের লম্বা লাইন পড়ে যায়। রাস্তায় দাঁড়িয়েই প্যাসেঞ্জার তোলা হয় ও নামানো হয়। এক কথায় রাজ্য সড়ক হয়ে উঠেছে চাপড়ার বাস স্ট্যান্ড। যার ফলে ব্যস্ততম চাপড়া বাজার এলাকায় যানজট বাড়ে। নিত্যদিন ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। স্থায়ী বাস স্ট্যান্ড থাকলে এই সমস্ত যন্ত্রণার থেকে রেহাই পাওয়া যেত, এমনটাই দাবি করেন চাপড়ার বাসিন্দারা। চব্বিশের ভোটেও চাপড়া বিধানসভায় বাস স্ট্যান্ড ছিল নির্বাচনী ইস্যু।
দ্বিতীয়বার সাংসদ হয়ে চাপড়াবাসীর সেই ইচ্ছা পূরণেই সচেষ্ট হয়েছেন মহুয়া। অনেকেই একে মহুয়া মৈত্রের ‘উপহার’ বলে বর্ণনা করছেন। কারণ কৃষ্ণনগর লোকসভার মধ্যে চাপড়া বিধানসভা থেকেই সর্বাধিক ৫৮ হাজার লিড পেয়েছে তৃণমূল। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, চাপড়ায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর তীব্র মতানৈক্য প্রভাব ফেলতে পারেনি নির্বাচনের ফলাফলে। বরং সেই দ্বন্দ্বই চাপড়ার রেকর্ড লিডের রাস্তা সুগম করেছে। একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভাতেও চাপড়ার বিধানসভার ভূয়ষী প্রশংসা করতে শোনা যায় মহুয়া মৈত্রকে।
জানা গিয়েছে, সাংসদ তহবিলের টাকায় চাপড়া বাস স্ট্যান্ডের মূল পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। প্রায় এক কোটি টাকায় স্ট্যান্ডের ঢালাই, শেড, বসার জায়গা তৈরি করা হবে। তার ডিপিএর ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে। জেলা পরিষদের তরফ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা খরচ করে শৌচালয় তৈরি করা হবে। ৭ লক্ষ টাকায় দু’টি হাইমাস্ট লাইট ও ২০ লক্ষ টাকার দু’টি সজলধারা বসানো হবে বাস স্ট্যান্ডে।
চাপড়ার তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শুকদেব ব্রহ্ম বলেন, পরিবহণ দপ্তর চাপড়ার বাস স্ট্যান্ডের ডিপিআর তৈরি করেছিল। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে তা হয়ে ওঠেনি। আমাদের সাংসদ চাপড়াবাসীকে বাস স্ট্যান্ড উপহার দিচ্ছেন। এটা আমাদের বড় পাওনা। এই উন্নয়নই চাপড়াকে তৃণমূলের দুর্জয় ঘাঁটি তৈরি করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কাদের শেখ বলেন, চাপড়ায় বাস স্ট্যান্ড তৈরির জন্য আমরা দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছি। অতীতে কাজ হওয়ার কথা শুনেও ছিলাম কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। অবশেষে তা হতে চলেছে এটাই খুশির খবর।