নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: দু’মাস ধরে বকেয়া অঙ্গনওয়াড়ির শিশু ও প্রসূতিদের খাবারের বিল। তার জেরে বিপাকে পড়েছেন আইসিডিএসের বাঁকুড়া জেলার কর্মী-সহায়িকারা। অবিলম্বে বকেয়া মেটানো এবং খাবার, জ্বালানিতে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবিতে বৃহস্পতিবার তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। জেলাশাসকের অফিস ‘অভিযান’ কর্মসূচি করতে গেলে পুলিসের বাধার মুখে পড়েন কর্মী-সহায়িকারা। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার তামলিবাঁধ থেকে তাঁরা মিছিল করে আসেন। কিন্তু, তাঁদের মিছিল জেলাশাসকের অফিস চত্বরের বাইরে সাইবার ক্রাইম থানার সামনে আটকে দেয় পুলিস। তারফলে কর্মী সহায়িকারা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে ওয়েস্ট বেঙ্গল অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার অ্যান্ড হেল্পার্স ইউনিয়নের বাঁকুড়া জেলা শাখার কয়েকজন প্রতিনিধি আইসিডিএস-এর জেলা প্রকল্প আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে আট দফা দাবিতে স্মারকলিপি জমা দেন।
বাঁকুড়ার ভারপ্রাপ্ত ডিপিও মিঠুন সরকার বলেন, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সহায়িকাদের স্মারকলিপি নেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে।
অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী সহায়িকাদের দাবি, বাঁকুড়া জেলায় প্রায় ৫৮০০ কেন্দ্র রয়েছে। জেলার প্রত্যেক কেন্দ্রেই মে ও জুন মাসের সব্জি, ডিম ও জ্বালানির বিল বকেয়া রয়েছে। বিল না মেলায় বাজার থেকে সব্জি সহ অন্যান্য সামগ্রী কিনতে তাঁদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এদিন অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী-সহায়িকারা বাঁকুড়ার তামলিবাঁধ থেকে মিছিল করে জেলাশাসকের অফিস চত্বরের দিকে আসেন। কিন্তু, তার আগেই তাঁদের পথ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয় পুলিস। সংগঠনের তরফে চায়না কর্মকার, প্রতিমা কাঞ্জিলাল, কাজল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বর্তমানে মূল্য বৃদ্ধির বাজারে গত দু’মাসের বিল বকেয়া রেখেছে প্রশাসন। তারফলে আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আমরা শিশু, প্রসূতিদের নিয়ে কাজ করি। তাঁদের পুষ্টির বিষয়টি অঙ্গনওয়াড়ি থেকেই মেটানো হয়। বহু পরিবার এখানকার খাবারের ভরসায় থাকে। অথচ বরাদ্দ বৃদ্ধি না হওয়ার ফলে কেন্দ্রগুলি চালাতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারই এব্যাপারে উদাসীন। তাই এদিন প্রশাসনের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিস আমাদের মিছিল আটকে দেওয়ায় ধিক্কার জানাচ্ছি।
মাসের প্রত্যেক সপ্তাহেই জ্বালানি, সব্জির বিল দিয়ে দেওয়ার দাবি জানান অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। তাঁদের আরও দাবি, প্রকল্প চালাতে স্মার্টফোন, সিমকার্ড ও তা রিচার্জের টাকা সময়মতো দিতে হবে। রিচার্জের টাকা বৃদ্ধির দাবিও তাঁরা জানিয়েছেন। এছাড়াও কেন্দ্রগুলিতে শৌচাগার ও রান্নার জন্য পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা করাও জরুরি। তারসঙ্গে যেসব কেন্দ্র এখনও গাছতলায় চলছে, সেখানে অবিলম্বে অস্থায়ী রান্নাচালার বন্দোবস্ত করার দাবিতে তাঁরা সরব হন।
প্রশাসন তাঁদের দাবি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় বিক্ষোভ ওঠে। বকেয়া বিল মেটানোর জন্য ইতিমধ্যে প্রস্তাবও পাঠিয়েছে প্রশাসন। তবে মাঝে মধ্যেই বিল বকেয়া থাকার অভিযোগ তুলেছেন কর্মী-সহায়িকারা।