• তৃণমূল নেতা বাড়ির সামনে ব্রিজ কেন, অবরোধ, বিক্ষোভ ঘাটালে
    বর্তমান | ২৬ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, ঘাটাল: তৃণমূলের ঘাটাল ব্লক সভাপতি দিলীপ মাজি প্রভাব খাটিয়ে তাঁর বাড়ির সামনে প্রস্তাবিত ফুটব্রিজ তৈরি করতে চাইছেন। এই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখালেন ঘাটাল ও দাসপুর-১ ব্লকের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, ব্রিজটি এমন জায়গায় করা হোক, যাতে সকলের সুবিধে হয়। বৃহস্পতিবার ঘাটাল-সুজানগর রাস্তার উপর নিমতলায় দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধের ফলে বহু মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস এদিনের ব্রিজ নিয়ে বিক্ষোভ-অবরোধের ঘটনা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এনিয়ে আজ শুক্রবার তিনি একটি মিটিং করবেন। সেখানেই সবার মতামত নিয়ে কোথায় ব্রিজ করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।


    উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের আগে ঘাটাল ব্লকের শিলারাজনগর গ্রামের পড়ুয়ারা দেবের কাছে একটি ব্রিজ তৈরির দাবি জানিয়েছিল। সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি রামপদ মান্না বলেন, সেই দাবি মতোই দাদা (দেব) কয়েক দিন আগে ওখানে একটি লোহার ফুট ব্রিজ তৈরির জন্য বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের (বিএসডিএ) কাছে লিখিত প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। শিলাবতীর পূর্ব পাড়ে রসিকগঞ্জের উত্তর দিকের গ্রামের নাম নিমতলা আর দক্ষিণ দিকের গ্রামের নাম গাদিঘাট। দাসপুর-১ ব্লকের নিমতলা, ঘাটাল ব্লকের রানাপুর, অজবনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের বক্তব্য, ঘাটাল ব্লকের শিলারাজনগরের  দক্ষিণ দিক থেকে দাসপুর-১ ব্লকের রসিকগঞ্জ বা গাদিঘাট সংযোগকারী ওই ফুটব্রিজটি হলে কেবল মাত্র শিলারাজনগর এবং রাধাকান্তপুর গ্রামের মানুষের সুবিধে হবে। কিন্তু যদি শিলারাজনরের উত্তর দিক থেকে নিমতলা সংযোগকারী ওই ফুটব্রিজটি করা হয় তাহলে উভয় দিকের বহু গ্রামের সুবিধে হবে। অবরোধকারীদের অভিযোগ, দিলীপবাবুর বাড়ি যেহেতু শিলারাজনগরের দক্ষিণ দিকে সেজন্য তিনি প্রভাব খাটিয়ে তাঁর বাড়ির কাছ থেকে রসিকগঞ্জ বা গাদিঘাটে ব্রিজটি তৈরি করতে চাইছেন। দাসপুর-১ ব্লকের নিমতলার বাসিন্দা সোমরাজ দত্ত, শেখ হাবিবুর, কার্তিক মোদক, ঘাটাল ব্লকের শিলারাজনগরের বাসিন্দা ধনঞ্জয় হাইত, জিতেন হাইত প্রমুখ বলেন, আমরা চাইছি বৃহত্তর স্বার্থেই নিমতলা এবং উত্তর শিলারাজনগরে মধ্যে ব্রিজটি তৈরি হোক। কারণ, ঘাটাল ব্লক থেকে নদী পেরিয়ে নিমতলায় এলেই হাতের সামনে বাজার, পোস্ট অফিস, দমকল অফিস, ঘাটাল-মেচোগ্রাম রাস্তা পাওয়া যাবে। নিমতলায় ব্রিজ তৈরি হলে রসিকগঞ্জ স্কুলের পড়ুয়াদের যাতায়াতেরও কোনও সমস্যা হবে না। দিলীপবাবু বলেন, আমি নিজের স্বার্থে কোনও কাজই করিনি। দেবই পড়ুয়াদের দাবিকে মান্যতা দিয়ে গাদিঘাট-দক্ষিণ শিলারাজনগরের মধ্যে ব্রিজে তৈরির সুপারিশ করেছেন। আমি করিনি।


    ঘাটাল ব্লকের শিলারাজনগর, রাধাকান্তপুর সহ অজবনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা শিলাবতী নদী পেরিয়ে দাসপুর-১ ব্লকের গাদিঘাটে আসেন। সেখান থেকে অতি সহজেই ঘাটাল-মেচোগ্রাম রাস্তা, দাসপুর গঞ্জ, ঘাটাল শহরে আসতে পারেন। ওই এলাকার বহু পড়ুয়াও নদী পেরিয়ে দাসপুর-১ ব্লকের রসিকগঞ্জ হাইস্কুলে আসে।  বর্ষার সময় ভরা নদীতে তাদের নৌকায় করে যাতায়াত করতে হয়। আর বর্ষা কাটলে গ্রামবাসীরা লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে শিলাবতী নদীর উপর একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। সেই সাঁকো দিয়েই যাতায়াত করা হয়। এই সমস্যা মেটাতেই পড়ুয়ারা ব্রিজের দাবি জানিয়েছিল।
  • Link to this news (বর্তমান)