• জিআই ট্যাগ পাওয়া তুলাইপাঞ্জি চাষের এলাকা বাড়াতে উদ্যোগ নিল কৃষিদপ্তর
    বর্তমান | ২৬ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কালিয়াগঞ্জ: স্বাদ ও সুগন্ধ বজায় রেখে জিআই ট্যাগ পাওয়া তুলাইপাঞ্জি ধান চাষের এলাকা বৃদ্ধি করতে উদ্যোগী হল কৃষিদপ্তর। কালিয়াগঞ্জ ও হেমতাবাদ ব্লকে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে তুলাইপাঞ্জি ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কালিয়াগঞ্জ ও হেমতাবাদ ব্লকের কৃষকদের তুলাইপাঞ্জি ধানের বীজ বিলি করেছে কৃষিদপ্তর। ব্যক্তিগত উদ্যোগেও তুলাইপাঞ্জি চাষ করছেন কৃষকরা। গত বছরের তুলনায় দুই ব্লকে এই ধান চাষের এলাকা বেড়েছে বলে দাবি কৃষি দপ্তরের।


    কালিয়াগঞ্জ ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা মৌমিতা ঘোষ বলেন, স্বাদ ও সুগন্ধের জন্য আমাদের তুলাইপাঞ্জি চালের সুনাম দেশ-বিদেশে। আমরা তুলাইপাঞ্জি ধান চাষের এলাকা বৃদ্ধি করতে উদ্যোগ নিয়েছি। কৃষকদের মধ্যেও তুলাইপাঞ্জি ধান চাষে আগ্রহ রয়েছে। এবছর ৪০৫ হেক্টর জমিতে তুলাইপাঞ্জি ধান চাষের জন্য কৃষকদের বীজ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। আমরা কালিয়াগঞ্জ ব্লকে ২২০০ হেক্টর জমিতে এই ধান চাষের উদ্যোগ নিয়েছি। 


    হেমতাবাদ, কালিয়াগঞ্জ, রায়গঞ্জে মূলত তুলাইপাঞ্জি ধানের চাষ হয়। এবারও 


    হেমতাবাদের গুঠিন এলাকার চাষি ইউসুফ আলি তিনবিঘা জমিতে তুলাইপাঞ্জি চাষ করছেন। বীজতলা তৈরি হয়েছে। কিছুদিন পরেই জমিতে ধানের চারা রোপণ করবেন। 


    ইউসুফ বলেন, কৃষি দপ্তর থেকে ধানের বীজ ও জৈব সার পেয়েছি। এই ধান চাষ করতে ১১০ থেকে ১২০ দিন লাগে। অন্য সাধারণ ধানের থেকে এই ধান চাষ করতে অনেক যত্ন নিতে হয়। সুগন্ধের জন্য উত্তর দিনাজপুরের  এই ধান ও চাল বিখ্যাত।


    হেমতাবাদ ব্লকেও এই বছর ৪৬০ হেক্টর জমিতে তুলাইপাঞ্জি ধান চাষের  হবে। হেমতাবাদের সহ কৃষি অধিকর্তা যুগল গুরুং বলছেন, এই ধানচাষে শুধুমাত্র জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। কারণ অন্য সার দিলে এই ধানের সুগন্ধ নষ্ট হয়ে যাবে। জিআই ট্যাগ পাওয়ার পর এই ধান চাষে কৃষকদেরও আগ্রহ বেড়েছে। 


    উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ব্লক ও সংলগ্ন এলাকার জমিতে উৎপাদিত  এই ধান দেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের মন জয় করেছে তার সুগন্ধ ও স্বাদে। এই ধান চাষে চাষিদের উত্সাহ দেওয়া হলেও উৎপাদিত ধান বা চাল কেনায় কৃষি দপ্তরের কোনও উদ্যোগ নেই বলে আক্ষেপ কৃষকদের।


    রামপুরের আমিনুল হকের কথায়, রায়গঞ্জের বাজারে ১৩০ টাকা কেজি দরে তুলাইপাঞ্জি চাল বিক্রি হয়। কিন্তু সরকারিভাবে ধান বা চাল কেনার কোনও উদ্যোগ নেই। এই ধান বা চাল বিক্রি করতে আমাদের ছুটতে হয় ব্যবসায়ীদের দুয়ারে। 


    যদিও কৃষকদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে কৃষিদপ্তর। কৃষি আধিকারিকদের বক্তব্য, আগামী দিনে অন্য ধানের মতো তুলাইপাঞ্জি ধান ও চাল সরকারিভাবে কেনার সম্ভাবনা রয়েছে। এই চালের সুখ্যাতি যেহেতু রাজ্য তথা দেশজুড়ে রয়েছে, তাই কৃষকরা বেশি করে এই ধান চাষেও ঝুঁকছেন। 
  • Link to this news (বর্তমান)