নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানালেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। উত্তরবঙ্গ সংক্রান্ত বিষয়ে সুকান্ত যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা বাস্তবসম্মত নয় বলে মনে করেন বিষ্ণু। মানুষকে বিভ্রান্ত করে ভোটের রাজনীতি সুকান্ত যেন না করেন, সেই পরামর্শও দিয়েছেন বিজেপির ‘বিদ্রোহী’ বিধায়ক।
উত্তরবঙ্গের আট জেলাকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে রেখেছেন কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই প্রস্তাব সামনে আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বৃহস্পতিবার বিধানসভা চত্বরে দাঁড়িয়ে সুকান্তর সমালোচনা করলেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। তিনি বলেন, সুকান্তবাবু যে প্রস্তাব দিয়েছেন, আমার মতে, তা পূরণ হবে না। ওই প্রস্তাব বাস্তবসম্মত নয়, একেবারে অবাস্তব।
কেন সুকান্তর প্রস্তাবের সঙ্গে বাস্তবের সামঞ্জস্য নেই, তার ব্যাখ্যাও বিষ্ণু তুলে ধরেছেন। তাঁর বক্তব্য, সিকিমের নিজস্ব আইন আছে। ফলে হঠাৎ করে পশ্চিমবঙ্গের একটা অংশ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যেতে পারে না। আর পশ্চিমবঙ্গের যে আটটি জেলা রয়েছে, তা হঠাৎ করে কোন ভিত্তিতে উত্তর-পূর্বের অংশ হবে? এই সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনও আইন বা ব্যাখ্যা নেই। ফলে বাংলার ভিতরে থেকে আলাদা রাজ্য হতে পারে না। সুকান্তবাবু বিষয়টি বোঝেনই না।
উত্তরবঙ্গের প্রসঙ্গটি শুধু তুলে ধরার সঙ্গে সুকান্তর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বিষ্ণু। ফলে ঘরের মধ্যেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি কড়া নিন্দার মুখে পড়লেন দলের বিধায়কের কাছেই। বিষ্ণুপ্রসাদ বলেছেন, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের ফল দেখে ঘাবড়ে গিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। উনি উত্তরবঙ্গের মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। মিথ্যা রাজনীতি করা একেবারেই ঠিক নয়। ওঁর যদি ক্ষমতা থাকে ২০২৫ সালের বাজেটের আগে উত্তরবঙ্গকে ‘আলাদা রাজ্য’ কিংবা ‘কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল’ করে দেখান। তবে উনি যদি সেটা করতে পারেন, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব!
এর আগে উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার দাবিতে সরব হয়েছিলেন বিজেপির জন বারলা। তারপর বিজেপির একাধিক বিধায়কও ওই দাবিতে আওয়াজ তোলেন। কিন্তু রাজ্য বিজেপি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, বাংলাভাগের বিপক্ষে তারা। এমতাবস্থায় উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিকে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব নিয়ে সুকান্তকে এখন ঘরে-বাইরে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে।