গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আহত ছাত্রী ও প্রাক্তনীর অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক। ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে তাঁদের রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, তাঁদের যথেষ্ট রক্তক্ষরণ হয়েছে। স্বরনালীতে গভীর ক্ষত রয়েছে। ছাত্রীর তুলনায় যুবকের অবস্থা বেশি সঙ্কটজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। এদিকে, ঘটনার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।শুক্রবার সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার বিষয় বিশেষ করে জোড় দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচয় পত্র দেখার পরেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার বিশ্বজিৎ দাস নিজে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশ গেটে দাঁড়িয়ে থেকে বিষয়টি দেখছেন। বহিরাগতদের খাতায় স্বাক্ষর করে ভেতরে ঢুকতে হচ্ছে। উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট-এ ঘুরে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের আপাতত ক্যাম্পাসে একা একা না ঘুরে দলবদ্ধ ভাবে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অস্বাভাবিক কিছু মনে হলে জানাতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র বলেন, ‘আমাদের ডিপার্টমেন্ট-এর একজন ছাত্রীর সঙ্গে এরকম হল। এটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা শুধু এটুকু চাই, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে যেন নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ছাত্রী নবনীতা দাস বলেন, ‘এরকম ঘটনা যে কোনও জায়গায় হতে পারে। যেহেতু, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে এই ঘটনা ঘটল, সেই কারণে এটা আমাদের কাছে খুবই আশঙ্কাজনক। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত ক্যাম্পাসে আরও বেশি পরিমাণে সিসিটিভি লাগানোর।’
প্রসঙ্গত, মালদার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষের অঙ্কের ছাত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তীকে অতর্কিতে এলোপাথাড়ি কোপানোর অভিযোগ ওঠে এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত যুবক ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অলোক মণ্ডল। তিনি নিজেও এই ঘটনার পর আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। এই ঘটনার পরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। দুজনকেই গুরুতর অবস্থায় গতকালকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মালদা হাসপাতালের MSVP প্রসেনজিৎ জানান, আগামীকাল রাতে দু’জনের অপারেশন করা হয়েছে। দু’জনের অবস্থাই এখন আশঙ্কাজনক। তবে, আজকে দু’জনের শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে দু’জনকেই।’
সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হয়েছে পুলিশের তরফে। ছাত্রীর বাবা জানান, মেয়ে খুব চাপা স্বভাবের ছিল। কোনও সম্পর্কের ব্যাপারে বাড়িতে আমাদের কিছু জানায়নি। অন্যদিকে, অভিযুক্ত ওই যুবকের বোন তনুশ্রী মণ্ডল জানান, দাদার সম্পর্কে মেয়েটির কোনও সম্পর্ক ছিল কিনা, সেই বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই।