একদিকে, গ্রেটার কোচবিহার কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি। অন্যদিকে, মালদা-মুর্শিদাবাদের সঙ্গে ঝাড়খণ্ড-বিহারের কিছু অঞ্চলকে যোগ করে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার দাবি। লোকসভা নির্বাচনের দেড় মাসের মাথাতেই রাজ্য ভাগের দাবি নিয়ে ফের সরব বিজেপির একাংশ। বিজেপি নেতাদের মন্তব্য নিয়ে তোপ দাগলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘কোনওভাবেই বঙ্গভঙ্গ হতে দেব না’ স্পষ্ট দাবি মুখ্যমন্ত্রীর।ঘটনার সূত্রপাত ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের মন্তব্য থেকে। সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি মন্তব্য করেন, বিহারের পূর্ণিয়া, আরারিয়া, কাটিহার, কিষাণগঞ্জ এবং পশ্চিমবঙ্গের মালদা, মুর্শিদাবাদে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ ঘটছে। যে কারণে, এই পাঁচটি জায়গায় জনবিন্যাস পরিবর্তিত হয়েছে। এই পাঁচটি জায়গাকে নিয়ে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ।
স্বাভাবিকভাবেই, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ে তোলার দাবি নিয়ে বিতর্কের আঁচ এসে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। নিশিকান্ত দুবের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে আরও একধাপ এগিয়ে মন্তব্য করলেন মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরী শঙ্কর ঘোষ। তিনি জানান, দু’বছর আগেই মুর্শিদাবাদ, মালদা এবং ঝাড়খণ্ডের কয়েকটি জেলাকে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। এই জেলার নিরাপত্তার স্বার্থে এই দাবি করেছিলেন তিনি। এই মর্মে রাজ্যপাল এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে জোর চর্চা শুরু রাজ্য রাজনীতিতে। নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য দিল্লি উড়ে গিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লির বঙ্গভবন থেকে মুখ্যমন্ত্রী একটি বার্তায় বলেন, ‘বিজেপি নেতারাও বাংলা ভাগের পক্ষে সওয়াল করছেন। বিজেপি নেতাদের এহেন আচরণ নিন্দনীয়। একদিকে, আর্থিক বঞ্চনা অন্যদিকে বাংলা ভাগের চক্রান্ত করা হচ্ছে। আমরা বঙ্গভঙ্গ করতে দেব না।’
বিজেপি বিধায়কের এই মন্তব্য নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিষয়টি নিয়ে ফিরহাদ হাকিম জানান, বিজেপির পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ‘মুখ থুবড়ে’ পড়েছে বিজেপি। ফিরহাদ বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার থেকে যেদিন বিজেপি চলে যাবে, সেদিন দেখবেন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকে আলাদা দেশ করার কথা বলবে।’