• রাজ্য ভাগের পক্ষে বিজেপি বিধায়ক, মুর্শিদাবাদকে আলাদা করার প্রস্তাব, তুমুল বিতর্ক...
    আজকাল | ২৭ জুলাই ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক : বিহার থেকে নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের পর এবার মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ মুর্শিদাবাদ-মালদা জেলা সহ বিহার ও ঝাড়খণ্ডের কিছুটা অংশ নিয়ে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরির দাবি তুললেন।

    বিজেপি বিধায়ক এই দাবি তোলার পর তাঁর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। শুক্রবার বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন,"গতকাল বিহারের সাংসদ নিশিকান্ত দুবে মালদা-মুর্শিদাবাদ এবং বিহার-ঝাড়খণ্ডের কিছুটা অংশ নিয়ে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরির দাবি জানিয়েছেন। এই একই দাবি আমি অনেকদিন আগে থেকেই করে আসছি। ২০২২ সালের ১৮ আগস্ট এই দাবি জানিয়ে আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটি চিঠি লিখেছিলাম।"

    তিনি বলেন," মালদা এবং মুর্শিদাবাদ জেলা দিয়ে যেভাবে অনুপ্রবেশের ঘটনা বেড়ে চলেছে তাতে আগামীদিন দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। যে 'শক্তি' দেশকে আবার ভাগ করতে চায় তারা বাংলাদেশ হয়ে ভারতে প্রবেশ করছে। এরপর মালদা এবং মুর্শিদাবাদ হয়ে তারা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। যদিও গোটা বিষয়টি জেনেও প্রশাসন নির্বিকার। এই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস কেবলমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। তারা দেশের নিরাপত্তার কথা ভাবেনা। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে আমি মালদা-মুর্শিদাবাদ-ঝাড়খন্ড এবং বিহারের কিছুটা অংশ নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি তুলেছি। এই দাবি পূরণ হলে মালদা এবং মুর্শিদাবাদ জেলা যেমন বাঁচবে, দেশও সুরক্ষিত থাকবে।" 

    মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক আরও বলেন," আমি দু'বছর আগে যে দাবি তুলেছিলাম আমার দল এখন সেই সিদ্ধান্তে আস্থা রাখছে। আমার বিশ্বাস আগামীদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমার তোলা দাবির যৌক্তিকতা বিচার করে মুর্শিদাবাদ এবং মালদা সহ আরও কিছু অংশকে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করবেন যাতে দেশের নিরাপত্তা সুরক্ষিত হয়।"

    অন্যদিকে বিজেপির তোলা এই দাবিকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন মুর্শিদাবাদের জেলার ফরাক্কার তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন,"বিজেপি সরকার মানুষের সেবা করার জন্য আসেনি। তারা ঘৃণা এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে দেশকে ১০০ বছর পেছনে ফেলে দিতে চাইছে। ভারতকে স্বাধীন করতে হিন্দুরা যতটা রক্ত দিয়েছে মুসলিম এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষদের অবদানও ততটাই। বিজেপি নেতারা একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করে তাদেরকে শিক্ষা কর্মক্ষেত্র- সবকিছুতে পিছিয়ে দিতে চাইছে।"

    তিনি বলেন," তবে এবছরের লোকসভা নির্বাচন প্রমাণ করে দিয়েছে দেশের মানুষ ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে। মানুষ ধর্ম যায় না ,তারা কাজ এবং শিক্ষা চায়।"

    মনিরুল বলেন," মুর্শিদাবাদ-মালদার মানুষ চিরকাল নিজেদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য বজায় রেখে বসবাস করেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা একে অপরের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে চলেছেন, কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি। বিজেপি নেতারা এখন মানুষের মধ্যে জোর করে সমস্যা তৈরির চেষ্টা করছেন।"

    তৃণমূলের বহরমপুর -মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন ,"এই লোকসভা নির্বাচনে মানুষের রায় তৃণমূল কংগ্রেস এবং সংবিধান রক্ষার পক্ষে গেছে। নিজেদের পরাজয় মানতে না পেরে বিজেপি সংবিধানের 'স্পিরিট' নষ্ট করতে চাইছে। তবে মমতা ব্যানার্জি বেঁচে থাকতে এবং তৃণমূল দল ক্ষমতায় থাকলে বাংলা ভাগ হবে না। "
  • Link to this news (আজকাল)