• কুসংস্কারের বলি বধূ! ওঝাকে আটকে বিক্ষোভ
    বর্তমান | ২৭ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, শান্তিনিকেতন: একবিংশ শতাব্দীতেও কুসংস্কারের বলি এক আদিবাসী গৃহবধূ। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করালেও সেই ওষুধ খেতে দিতেন না স্থানীয় ওঝা। তাঁর ঝাড়ফুঁক করা জরিবুটি খেয়েই সারবে বলে জানানো হয়েছিল। তার জেরে তিলে তিলে মৃত্যু হল গৃহবধূ তুলসী টুডুর(২৬)। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার শান্তিনিকেতন থানার বনডাঙা গ্রামে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযুক্ত ওঝাকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পুলিস এসে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে অভিযুক্ত ওঝাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরে তাঁকে আটক করা হয়।  বোলপুর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বনডাঙা আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দা তুলসীদেবী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তাঁর চিকিৎসা চলছিল সরকারি হাসপাতালে। কিন্তু, রোগ কিছুতেই সারছিল না। তারপরে স্থানীয় ওই ওঝার  দ্বারস্থ হয় গৃহবধূর পরিবার। জানা গিয়েছে, অনেকেই ওঝার কাছে সমস্যা নিয়ে হাজির হতেন। তার বিনিময়ে মোটা টাকা, জমি জায়গা ও সোনার গয়না দাবি করতেন তিনি। হাসপাতালে দেখিয়েও সুস্থ না হওয়ায় তুলসীকে তাঁর কথামতো চলতে বলেন ওই ওঝা। হাসপাতাল থেকে দেওয়া কোনও ওষুধ বধূকে খেতে দেওয়া হয়নি। তার বদলে ওই ওঝা নিজের বানানো জরিবুটি খেতে দিতেন। কিন্তু, তারপরও রোগ সারছিল না তুলসীর। অভিযোগ শারীরিক অসুস্থতা সম্পূর্ণভাবে ঠিক করে দেওয়ার জন্য আরও টাকার দাবি করেন ওই ওঝা। এমনকী টাকা দিতে সমস্যা হওয়ায় ওই বধূর মৃত্যু হতে পারে  বলে হুমকি দেন ওঝা। তারপরই বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে মৃত্যু হয় তুলসীর। বধূর বাড়িতে থাকা একটি পেয়ারা গাছ আচমাই শুকিয়ে যায় বলে দাবি। ঝাড়ফুঁক করে তন্ত্র সাধনার মধ্যে দিয়ে তুলসীকে মেরে ফেলেছেন ওঝা। এই অভিযোগ তুলে শুক্রবার বনডাঙার আদিবাসী পাড়ায় ওঝাকে আটকে রেখে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। অশান্তির খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছে পুলিস ওঝাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।  অভিযুক্ত ওঝা বলেন, আমি কারও চিকিৎসা করতাম না। এখানে মায়ের পুজো করি। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে কিছু আয়ুর্বেদ শিখেছি। তাই জরিবুটি দিতাম।  মৃত বধূর স্বামী সোম টুডু বলেন, টাকা দিতে না পারায় আমার স্ত্রীর মৃত্যু হবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন ওই ওঝা। তারপরেই বাড়িতে থাকা একটা গাছ হঠাৎ করে শুকিয়ে যায়। আমার স্ত্রীরও মৃত্যু হয়। আমরা এই ওঝাকে আর এলাকায় থাকতে দেব না।
  • Link to this news (বর্তমান)