• খণ্ডঘোষে গর্ভভাড়া দেওয়ার ঘটনার তদন্তে নেমে ‘বড়সড়’ চক্রের হদিশ
    বর্তমান | ২৭ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: খণ্ডঘোষের মহিলার বাস্তব কাহিনি হিন্দি সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানায়। তাঁর কাছে একটি চক্রের মাধ্যমে শিশু চেয়ে ‘অর্ডার’ আসত। অগ্রিম কিছু টাকা দেওয়া হতো। তারপরই তিনি গর্ভবতী হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতেন। এক থেকে দেড় বছরের মধ্যেই তিনি অর্ডার মতো সন্তান অন্য পরিবারের হাতে তুলে দিতেন। প্রশাসনের আধিকারিকরা শুক্রবার শাঁকারি গ্রামে গিয়ে ওই মহিলার সঙ্গে কথা বলেছেন। কোথায় কোথায় তিনি সন্তানদের দিয়েছেন, তা জানতে চান। শিশুদের ফিরিয়ে আনার পর তাদের হোমে পাঠানো হবে বলে তাঁরা জানান। 

    ওই মহিলা আধিকারিকদের জানিয়েছেন, সম্প্রতি বিক্রি করা তাঁর সন্তান গুজরাতে রয়েছে। জেলারই এক দম্পতি কর্মসূত্রে সেই রাজ্যে রয়েছেন। তাঁরা কিছুদিন পশ্চিম মেদিনীপুরে ছিলেন। তাঁদের কাছেই সন্তান রয়েছে। এলাকার এক ব্যক্তি ওই দম্পতির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ করে দেন। তাঁর কথা মতো তিনি গর্ভবর্তী হয়েছিলেন। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ। সেই কারণেই তিনি ওই চক্রের প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন বলে আধিকারিকদের কাছে দাবি করেছেন। আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, গর্ভবর্তী থাকাকালীন ওই মহিলাকে পুষ্টিকর খাবার ওই চক্রটি সরবরাহ করত। চিকিৎসক দেখানোর ব্যবস্থাও তারাই করে দিত। তিনি প্রতিবারই সুস্থ শিশু জন্ম দিয়েছেন। কোনও শিশু  দম্পতির হাতে তুলে দেওয়ার আগে একটি চুক্তি করতেন। শিশুটিকে তাঁরা ভালোভাবে রাখবেন বলে চুক্তিপত্রে লেখা হতো। দুই পরিবারের সম্মতিতে শিশুটিকে হস্তান্তরিত করা হয়েছে বলে তাতে উল্লেখ থাকত। সেই চুক্তিপত্রের একটি প্রতিলিপি মহিলার কাছে থাকত। এর আগে ওই মহিলা চারটি শিশু বিক্রি করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এক থেকে দেড় বছর বয়স হলেই ওই মহিলা সন্তানদের হস্তান্তর করতেন। পেশাদার হয়ে ওঠায় তিনি বিক্রি করে দেওয়া শিশুটিকে দেখতেও যেতেন না। 

    এক আধিকারিক বলেন, এসব ঘটনা সিনেমার পর্দায় দেখা যায়। কিন্তু বাস্তবে দেখতে হবে বলে কোনওদিন ভাবিনি। এত কাণ্ডর পরও ওই বধূর হেলদোল নেই। তিনি স্বাভাবিক রয়েছেন। পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের জনস্বাস্থ্য দপ্তরে কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বনাথ রায় বলেন, ওই মহিলাকে কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)