এই সময়: ব্যবসায়ী সংগঠনের ধর্মঘট উঠে যাওয়ার পর কেটে গিয়েছে ৪৮ ঘণ্টা। কিন্তু তার পরেও খুচরো বাজারে কমলো না আলুর দাম। পাইকারি ব্যবসায়ীরা যদিও জানিয়েছেন, হিমঘর থেকে বাজারে এসেছে পর্যাপ্ত আলু। তার পরেও কলকাতার খোলাবাজারে শুক্রবার কোথাও ৪০ টাকা, কোথাও ৪২ টাকা কেজি দরে জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে। ধর্মঘট ওঠার পরেও দাম না কমায় হতাশ মানুষ।অভিযোগ, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে খুচরো ব্যবসায়ীরাই দাম কমাচ্ছেন না। রাজ্য সরকারের তৈরি করা টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা বলছেন, শনিবার দামের দিকে নজর রেখে রবিবার থেকে তাঁরা ফের বাজারে হানা দেবেন। একই কথা বলেছেন রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালনমন্ত্রী অরূপ রায়।
শুক্রবার ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে তিনি বলেন, ‘হিমঘর মালিক, আলু ব্যবসায়ীদের সংগঠন এবং পরিবহণ মালিকদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। আমাদের আশা, দ্রুত আলুর দাম সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে আসবে।’ এরই মধ্যে বিদেশ থেকে আলু আমদানিতে অনুমতি দিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের প্রায় সর্বত্রই প্রতি-কেজি আলুর দাম ৫০ টাকার আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। সে জন্যেই এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের।
আনাজের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে গত ৯ জুলাই নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলুর দাম-বৃদ্ধি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। রাজ্যে উৎপাদিত আলু এবং পেঁয়াজ ভিনরাজ্য বা পড়শি দেশে পাঠানো বন্ধ করতেও বলেছিলেন। তার পরেই পুলিশ আলু বোঝাই লরি আটকাতে শুরু করে।
প্রতিবাদে পাইকারি আলু ব্যবসায়ীদের সংগঠন ধর্মঘট শুরু করে। তারা হিমঘর থেকে আলু বের করা বন্ধ করে দেয়। জোগানে ঘাটতিতে আলুর দাম কেজিতে ৪০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু ক’দিন পরে কৃষি বিপণনমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর ধর্মঘট তুলে নেওয়া হয়।
বুধবার থেকেই হিমঘরের আলু পাইকারি বাজারে পাঠানো শুরু হয়। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, জ্যোতি আলুর দাম কেজি প্রতি ৩৫ টাকা এবং চন্দ্রমুখী আলুর দাম ৪০ টাকার আশপাশে নামার কথা। অভিযোগ, বাস্তবে তা হয়নি। কলকাতার প্রায় সব বাজারেই জ্যোতি আলু কেজি প্রতি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, ‘আমরা শনিবারটা দেখব। তার পরেই রবিবারে বাজারে হানা দেব।’ অরূপ রায় বলেন, ‘মিডলম্যানদের জন্যেই দাম বাড়ছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাব।’ গত বছরেও ঘাটতি মেটাতে ভুটান থেকে আলু আমদানির অনুমতি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার।
পড়শি দেশগুলির মধ্যে ভুটানেই আলুর দর কিছুটা কম। এ বারও কেন্দ্র ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স ছাড়াই ভুটান ও অন্য পড়শি দেশ থেকে বিনা শুল্কে স্বল্প পরিমাণে আলু আমদানির অনুমতি দিতে পারে বলে খবর। দেশের মধ্যে বাংলা এবং উত্তরপ্রদেশে সব থেকে বেশি আলু উৎপাদন হয়। এ বার এই দুই রাজ্যেই আলুর উৎপাদন কম।