• ১৭ পুরসভায় ১ হাজার ৮৩৪টি অবৈধ নিয়োগ, চার্জশিটে জানাল CBI
    প্রতিদিন | ২৭ জুলাই ২০২৪
  • অর্ণব আইচ: রাজ্যের ১৭টি পুরসভায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে ১ হাজার ৮৩৪ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। চলতি জুলাইয়ের গোড়ায় সিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল‌্যকর তথ‌্য। ওই চার্জশিটের তথ‌্য অনুযায়ী, বেআইনিভাবে সব থেকে বেশি ৩২৯ জনের চাকরি হয়েছে দক্ষিণ দমদম পুরসভায়। এর পরই রয়েছে কামারহাটি পুরসভার নাম। এই পুরসভায় বেআইনিভাবে ৩০৩ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। পুর নিয়োগ দুর্নীতির তালিকায় তৃতীয় বরানগর পুরসভা।

    এই পুরসভায় ২৭৬ জনকে বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয় বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের। করোনাকালে দক্ষিণ দমদম পুরসভায় ৩২৯ জনের বেআইনি নিয়োগের তথ‌্য সামনে রেখে পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান পাঁচু রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই প্রথম চার্জশিটে পাচু রায় ছাড়াও অভিযুক্তর তালিকায় রয়েছেন অয়ন শীল ও তাঁর একাধিক সংস্থা। সিবিআইয়ের দাবি, পুর নিয়োগের দায়িত্ব ছিল অভিযুক্ত অয়ন শীলের সংস্থার হাতে। নিয়োগ দুর্নীতিতে অয়ন শীলকে গ্রেপ্তার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। পরে পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই।

    সিবিআইয়ের চার্জশিটে ১৭টি পুরসভার মধ্যে কোনটিতে কত সংখ‌্যক বেআইনি নিয়োগ হয়েছে, সেই তথ‌্য তুলে ধরা হয়েছে। সিবিআইয়ের তালিকা অনুযায়ী, দক্ষিণ দমদম পুরসভায় ৩২৯ জন, কামারহাটি পুরসভায় ৩০৩ জন, বরানগর পুরসভায় ২৭৬ জন, টিটাগড় পুরসভায় ২২১ জন, কৃষ্ণনগর পুরসভায় ২০০ জন, রানাঘাট পুরসভায় ১০১ জন, নিউ বারাকপুর পুরসভায় ৭৪ জন, উত্তর দমদম পুরসভায় ৬৪ জন, দমদম পুরসভায় ৬১ জন, কাঁচরাপাড়া পুরসভায় ৪৯ জন, হালিশহর পুরসভায় ৩৯ জন, বাদুড়িয়া পুরসভায় ৩৯ জন, বীরনগর পুরসভায় ২৬ জন, ডায়মন্ড হারবার পুরসভায় ১৮ জন, উলুবেড়িয়া পুরসভায় ১৮ জন, টাকি পুরসভায় ১৫ জন ও নবদ্বীপ পুরসভায় ১ জনকে বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়।

    চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে যে, এই ১ হাজার ৮৩৪ জনের চাকরি নিয়ম বহির্ভূতভাবে হয়েছিল। করণিক, সাফাইকর্মী, চালক, হেল্পার-সহ বিভিন্ন পদে তাঁদের নিয়োগ করা হয়। সিবিআইয়ের দাবি, অয়ন শীলের সংস্থার মাধ‌্যমেই পুরসভায় নিয়োগ হয়েছিল। ওই সংস্থাটিকে প্রশ্নপত্র ও ওএমআর শিট তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই সংস্থাটি ছিল পরীক্ষা নেওয়া থেকে শুরু করে ফল প্রকাশের দায়িত্বেও। এই সুযোগ নিয়েই অয়ন শীল চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে বিপুল টাকা তোলেন বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের।

    নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার হওয়া কুন্তল ঘোষ এবং শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সূত্র ধরে গত বছর প্রোমোটার অয়ন শীলের সল্টলেকের অফিসে ইডি তল্লাশি চালায়। অয়নের কম্পিউটার পরীক্ষা করতে গিয়েই রাজ্যের প্রায় ৬০টি পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত তথ‌্য পায় ইডি। সেই তথে‌্যর ভিত্তিতে সিবিআইও তদন্ত শুরু করে। এর মধ্য়ে ১৭টি পুরসভায় নিয়োগের ক্ষেত্রে বেনিয়ম হয় বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ। পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে এখনও তদন্ত চলছে সিবিআইয়ের। ফলে, পরবর্তী সময়ে এই মামলায় অতিরিক্ত চার্জশিটও পেশ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সিবিআই।
  • Link to this news (প্রতিদিন)