• পুজোর আগেই পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন! আগামী মাসেই বৈঠকে কেপিপি-র কেন্দ্রীয় কমিটি
    প্রতিদিন | ২৭ জুলাই ২০২৪
  • বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: পুজোর আগেই পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দবিতে আন্দোলনের রণকৌশল ঠিক করতে ৩১ জুলাই কামতাপুর পিপলস পার্টির (কেপিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। সেখানে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের উত্তরের আট জেলাকে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যুক্ত করার লিখিত প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে। কেপিপি নেতৃত্ব জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুকান্তবাবু যে প্রস্তাব পেশ করেছেন সেটার সঙ্গে তারা একমত নন। তাদের দাবি উত্তরের আট জেলা এবং নিম্ন অসমের ধুবুড়ি, গোয়ালপাড়া, বঙ্গাইগাঁও, কোকরাঝার এবং চিরাং নিয়ে পৃথক রাজ্য গঠন করতে হবে। ওই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কয়েকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। এবার ফের কামতাপুর রাজ্য গঠন এবং কামতাপুরি ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে চিঠি পাঠাবেন তারা।

    কামতাপুর পিপলস পার্টির (কেপিপি) সাধারণ সম্পাদক সুভাষ বর্মণ অভিযোগ করেন, সুকান্ত মজুমদার উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী। উনি ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে উত্তরের আট জেলাকে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যুক্ত করে আর্থিক প্যাকেজের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছেন। যেভাবে বিশেষ আর্থিক সাহায্য পেয়ে আসছে অরুণাচলপ্রদেশ, অসম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা এবং সিকিম। কিন্তু এভাবে উত্তরের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “পৃথক রাজ্য গঠন করে আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করতে হবে। উত্তরের সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব উত্তরবঙ্গবাসীকেই দিতে হবে। তাই আমরা সুকান্তবাবুর প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হতে পারছি না। ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয় কমিটি আলোচনায় বসে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেব।” যদিও সুভাষবাবু জানাতে ভোলেননি সুকান্তবাবু সাহস করে অবশ্যই একটি ভালো কাজ করেছেন। সেটি হল উত্তরের আট জেলার অনুন্নয়নের সমস্যা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসে তুলে ধরেছেন।

    যদিও এবারই প্রথম নয়। রাজনৈতিক মহলের মতে, উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য ঘোষণার দাবি তুলে এর আগে প্রাক্তন মন্ত্রী জন বারলা-সহ একাধিক বিজেপি বিধায়ক শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন। এবার দলের রাজ্য সভাপতি উত্তরবঙ্গকে দেশের উত্তর-পূর্বের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে পরোক্ষে পৃথক রাজ্য গঠনের দাবিকেই সমর্থন করলেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের। কেপিপি নেতৃত্ব অবশ্য দাবি করছেন, উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত করার অর্থ পৃথক রাজ্য নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে এটা করতে চাইছেন সুকান্তবাবুরা। কেপিপি-র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিখিল রায় জানান, দশ বছর আগে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি পাঠিয়ে উত্তরের আট জেলা এবং অসমের পাঁচ জেলা নিয়ে পৃথক রাজ্য গঠন এবং কামতাপুরি ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানানো হয়েছিল। এরপর একই দাবি ২০২২ সালে জানানো হয়। সুকান্তবাবুর প্রস্তাব শুনে মনে হচ্ছে উত্তরের সাংসদ হয়েও সেই দাবি মানছেন না। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় ওই বিষয়ে সবিস্তারে আলোচনার পর আন্দোলনের সিদ্ধান্ত হবে। আমরা পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনে নামছি।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)