লার্ভা নিধনে তেলাপিয়া ফেল, পুরসভার পরীক্ষায় সেরা সেই গাপ্পিই
এই সময় | ২৭ জুলাই ২০২৪
দেবাশিস দাস
মশার লার্ভা কে বেশি খেতে পারে--তা নিয়ে তেলাপিয়া আর গাপ্পি মাছের পরীক্ষা নিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। সূত্রের খবর, সেই পরীক্ষায় ডাহা ফেল তেলাপিয়া। স্টার মার্কস পেয়ে পাশ সেই পুরাতন গাপ্পিই। পুর-আধিকারিকরা বলছেন, মশার লার্ভা নিধনে গাপ্পির বিকল্প হিসেবে তেলাপিয়া মাছ ব্যবহারের কথা ভাবা হয়েছিল। সেই ভাবনা বিফলেই গিয়েছে।পুরসভার পতঙ্গ বিভাগের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, মশার লার্ভা নিধনে গাপ্পি মাছের ব্যবহার অনেক পুরোনো। কোনও জলাশয় বা নর্দমায় গাপ্পি ছাড়া হলে তা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। দলবদ্ধভাবে গাপ্পি মাছ জলে দ্রুত যাতায়াত করতে পারে। তারা দল বেঁধে ঘণ্টায় মশার কয়েক হাজার লার্ভা খেয়ে নিতে পারে। তাই লার্ভা নিধনে এখনও পর্যন্ত গাপ্পির বিকল্প কিছু মেলেনি।
পুরসভার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, গাপ্পি মাছ এক বার জলে ছেড়ে দিলে তার জীবনচর্চা নিয়ে আর ভাবতে হয় না। আর সব থেকে বড় কথা হলো, মানুষের মধ্যে গাপ্পি খাওয়ার কোনও চল নেই। তাই গাপ্পি মাছ ফুরিয়ে যাওয়ারও ভয় থাকে না। তেলাপিয়ার তুলনায় গাপ্পি অনেক ছোট মাছ, জলে মশার লার্ভা এবং ক্ষতিকারক উপাদান নিধনে গাপ্পি অত্যন্ত তৎপর এবং দ্রুতগামী। দলবদ্ধ ভাবে দ্রুত খাদ্য জোগাড়ে তারা অভ্যস্ত।
পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, ‘এক দল গাপ্পি মিলে ঘণ্টায় যখন দশ থেকে পনেরো হাজার লার্ভা খেয়ে ফেলে, সেখানে একাটা তেলাপিয়া ঘণ্টায় ছ’ থেকে সাতটা লার্ভা খেতে পারে। দল বেঁধে খেলেও এই সংখ্যাটা ২০০-র বেশি হবে না। তাই মশার লার্ভা নিধনে গাপ্পিই স্টার মার্কস পেয়েছে।’
পুরসভার পরিকল্পনা ছিল, তেলাপিয়া ব্যবহার করে এক ঢিলে দুই পাখি মারা। প্রথমত, তেলাপিয়া মশার লার্ভা খেয়ে মশা নিধনে সহায়ক হবে। দ্বিতীয়ত, শহরে পুরসভার অধীন জলাশয়গুলিতে তেলাপিয়ার চাষ বাড়িয়ে শহরের বাজারেই সেই মাছ বিক্রি করে খানিকটা অর্থনৈতিক লাভের মুখও দেখা যাবে।
সেই পরীক্ষা বিফলে যাওয়ার পর পুরসভার এক আধিকারিকের সরস মন্তব্য, ‘বাঙালি সর্ষে দিয়ে তেলাপিয়া রেঁধে হজম করতে শিখে ফেলেছে। গাপ্পি সেই দিক থেকেও বেঁচে গিয়েছে!’